ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট পলক

সিলেট জেলাকে স্মার্ট শহরে রূপান্তরের অংশ হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি।

প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো চেহারা ও যানবাহনের নাম্বার প্লেইট চিহ্নিতকরণ আইপি ক্যামেরা বসেছে সিলেট নগরে। এসব আইপি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য মনিটরিং রুম সিলেট জেলার কোতয়ালি মডেল থানায় স্থাপন করা হয়েছে। এ সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবে সিলেট মহানগর পুলিশ।

এসব ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি দিয়ে ব্যক্তির পরিচয় ও যানবাহনের বিস্তারিত তথ্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাবে পুলিশ, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করবে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার পর আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক কোতয়ালি থানায় এ আইপি ক্যামেরা বেজড সার্ভেল্যান্স সিস্টেমের মনিটরিং সেন্টার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।

প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে এই প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে টেকনোলজির আরটিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্বলিত বিভিন্ন ক্যামেরার বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করেন। নগরে বর্তমানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে আইপি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সিলেট পুলিশের মনিটরিং সিস্টেম উন্নত হবে এবং শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় সিলেট নগরের ৬২টি স্থানে মোট ১২৬ এক্সেস পয়েন্টের মাধ্যমে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নতিতে সহায়তা করবে। সাধারণ নাগরিক, এমনকি যাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সামর্থ্য নাই, তারাও বিনামূল্যে এই ওয়াই-ফাই জোন থেকে ইন্টারনেট এক্সেস করে জনসাধারণের জন্য সরকারী নীতি ও উন্মুক্ত পরিষেবাগুলিতে প্রবেশ করে সেবা গ্রহণ করতে পারবে। এ সিস্টেমটি পরবর্তীতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এ বিষয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাথে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের একটি পৃথক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

সিলেট জেলার কোতয়ালি থানায় এ আইপি ক্যামেরা বেজড সার্ভেল্যান্স সিস্টেমের মনিটরিং সেন্টার সরেজমিনে পরিদর্শনকালে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী মহোদয় বলেন, ‘স্মার্ট শহর গড়তে এবং শহরের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের আধুনিক এবং আস্থাজনক স্মার্ট সিকিউরিটি সল্যুশন সম্বলিত মনিটরিং সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই মুহুর্তে যেই নিরাপত্তা সিস্টেমগুলো উন্নত দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে আমরা সেগুলো এখন বাস্তবায়ন করছি। উন্নত দেশ, যাদের আয় প্রায় ৩০,০০০ অথবা ৫০,০০০ ডলার পার কেপিটা, সেই দেশের জনগণকে সরকার যেই সার্ভিস দেয়, আমরা ২০০০ ডলার পার কেপিটা ইনকাম করা জনগণকে সেই সার্ভিস দিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন বন্দুক পিস্তল নিয়ে রাস্তা পাহারা দেবার মধ্যে সীমাবদ্ধ নাই। এখন প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এরকম আরটিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্বলিত বিভিন্ন ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে মনিটরিং সেন্টারে ২৪ ঘন্টা রাউন্ড দ্য ক্লক কাজ করে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। এ প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলাকে মডেল টাউন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই পর্যন্ত প্রকল্পের যে অগ্রগতি দেখলাম তাতে আমি খুব সন্তুষ্ট।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক জনাব পার্থপ্রতিম দেব, এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মুসতাফিজুর রহমান, ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মহিদুর রহমান খান ও উপ-প্রকল্প পরিচালক মধূ সূদন চন্দ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিশনাল কমিশনার এবং প্রধান সল্যুশন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

Share This:

*

*