বাজেট পরবর্তী আলোচনায় বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি ও বাক্য

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে রবিবার রাজধানীর স্থানীয় এক হোটেলে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)।

সংবাদ সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনির, আইএসপিএবি’র সভাপতি এম এ হাকিম, বাক্য’র মহাসচিব তৌহিদ হোসেন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সভাপতি বলেন , আইসিটি খাতে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ সর্বশেষ অর্থবছরের চেয়ে ২১৭৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, গতবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বরাদ্দ এ বছর ১৯৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।  নতুন উদ্যোক্তাদের  জন্য সরকার ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ করেছে । পাশাপাশি, বাজেটে সোশ্যাল মিডিয়া ও ভার্চুয়াল বিজনেসের উপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এর উপর ভ্যাট কমানো হয়েছে যা প্রশংসনীয় ।  এজন্য আমরা অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।  কিন্তু একইসাথে ভার্চুয়াল বিজনেস তথা ডিজিটাল কমার্স এর উপর ভ্যাট (০) শতাংশ থেকে বেড়ে ৭.৫ শতাংশ হয়েছে যা বিকাশমান এই খাতের অগ্রগতির জন্য অন্তরায়। আমরা তাই বিকাশমান এই খাতের জন্য আগামী কয়েক অর্থ বছরের জন্য পুনরায় ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানাই।

বিসিএস সভাপতি মোঃ শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, ব্যবসায়ী পর্যায়ে কম্পিউটার ও এর যন্ত্রাংশের উপর মূসক অব্যহতি বহাল রাখা হয়েছে। এই প্রস্তাবনা অবশ্যই ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানী পর্যায়ে  ৫ শতাংশ  আগাম কর আরোপ করা হয়েছে। কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশ এবং সংশ্লিষ্ট যাবতীয় হার্ডওয়্যার সামগ্রীর উপর অতিরিক্ত কর ভার ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে বিবেচনায় নিয়ে ৫ শতাংশ আগাম কর থেকে অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন।

পাশাপাশি,কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশ আমদানী পরবর্তী পর্যায়ে সরবরাহ বা যে কোন ভাবে সরবরাহ বা বিক্রির উপর প্রস্তাবিত বাজেটে মূসক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৭.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের স্বার্থে তা পূর্বের ন্যায় ৫ শতাংশ বহাল রাখা হোক।

আইএসপিএবি সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তির প্রচার ও প্রসারের বিষয়ে অত্যন্ত তৎপর। এটি সুবিদিত যে, প্রতি ১,০০০ ব্রডব্যান্ড সংযোগের মাধ্যমে প্রায় ১০ জন কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এছাড়াও বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, প্রতি ১০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পেনিট্রেশনের মাধ্যমে ১.৩৮ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঘটে। এমন একটি অবস্থায় ফাইবার অপটিক ক্যাবলের উপর ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি (জউ) আরোপ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ ও প্রসারে এবং দ্রæত গতির ইন্টারনেট জন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে, যার প্রভাব সরকারী মেগাপ্রজেক্টগুলোতেও পড়বে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। উপরোক্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় ফাইবার অপটিক ক্যাবলের উপর ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি (জউ) আরোপ করার বিষয়টি মওকুফ করে করার জন্য আইএসপিএবি জোর দাবী জানায়।

বাক্যের মহাসচিব বলেন, ক্রমবর্ধমান তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর বাজেটে ভ্যাট ৫ শতাংশ বহাল আছে। তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর থেকে ভ্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের বিষয়টি আবারও বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি।

Share This:

*

*