জিপি অ্যাকসেলেরেটর দ্বিতীয় ব্যাচের ডেমো ডে অনুষ্ঠিত

গতকাল গ্রামীণফোনের করপোরেট কার্যালয় রাজধানীর বসুন্ধরার জিপি হাউজে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ‘জিপি অ্যাকসেলেরেটর’র দ্বিতীয় ব্যাচের ডেমো ডে।  উপস্থিত একশ’র বেশি দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাকসেলেরটের আয়োজক ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন ও এসডি এশিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সামনে নিজেদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করে অ্যাকসেলেরেটরের পাঁচটি স্টার্টআপ বাজঅ্যালি, সোশিয়ান, ক্র্যামস্ট্যাক, ঘুরি এবং সিএমইডি। ডেমো ডে’তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘জিপি অ্যাকসেলেরটর’ প্রোগ্রাম এবং নতুন স্টার্টআপ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের ভূমিকা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জিপি অ্যাকসেলেরেটর’র গ্রাজুয়েটদের বৈচিত্র্যময় ও পরিপক্ক সব ধারণার উপস্থাপন দেখে আমি অত্যন্ত রোমাঞ্চিত। গ্রামীণফোনের মতো করপোরেট প্রতিষ্ঠান দেশে স্টার্টআপ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানে যে ভূমিকা রাখছে আমি তাকে স্বাগত জানাই।”কঠোর পরিশ্রমের জন্য নির্বাচিত পাঁচটি স্টার্টআপ, এসডি এশিয়া ও গ্রামীণফোনকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরো বলেন যে এই ধরণের সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদী। বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী সামনের দিনগুলোতে জিপি অ্যাকসেলেরেটরের মতো এমন আরও বেশি সফল যৌথ উদ্যোগে নানা কর্মসূচির প্রত্যাশা করেন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার বি. ফারবার্গ বলেন, ‘স্টার্টআপগুলোর স্বল্প সময়ে এ পরিমাণ অগ্রগতিতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভূমিকা রেখে যাবো।’ গ্রামীণফোনের হেড অব ট্রান্সফরমেশন কাজী মাহবুব হোসেন বলেন, ‘একটি স্টার্টআপ গড়ে তুলতে যথাযথ ইকোসিস্টেম প্রয়োজন। ‘জিপি অ্যাকসেলেরটর’ কর্মসূচিতে সহায়তাদানের জন্য আমরা এ কর্মসূচির অংশীদার, প্রশিক্ষক, গ্রামীণফোনে আমাদের সহকর্মী এবং স্টার্টআপ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’

হেড অব জিপি অ্যাকসেলেরেটর মিনহজ আনোয়ার বলেন, ‘জিপি অ্যাকসেলেরেটরের উদ্দেশ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৫০টি বিশ্বমানের স্টার্টআপ গড়ে তোলা এবং এদের মধ্যে থেকে কয়েকটি স্টার্টআপকে শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে সহায়তা করা এবং সঠিক নির্দেশনা প্রদান করা।’

অনুষ্ঠানে এসডি এশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন,” গত চার মাসে এই কর্মসূচী শূন্য থেকে শুরু করে অনেক দুর এগিয়ে গেছে। বিপুল সময় ব্যয় করে উদ্যােগতাদের ব্যবসাকে গড়ে তুলতে সহায়তা করা হয়েছে এবং একটি কোম্পানি এতদূর এগিয়ে গেছে যে ২০১৬ এর শেষে তার রাজস্ব হবে প্রায় ১ লাখ ডলার। এই ধরণের সাফল্য বাংলাদেশের লাখো মানুষকে অনুপ্রানিত করবে।”

২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের সেরা প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলো খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে এসডি এশিয়ার যৌথ সহযোগিতায় ‘জিপি অ্যাকসেলেরেটর’র উদ্বোধ্ন করে গ্রামীণফোন। সফলভাবে এ কর্মসূচির প্রথম ব্যাচ শেষ হওয়ার পর এ বছর আগস্ট মাসে দ্বিতীয় ব্যাচের যাত্রা শুরু হয়।

শতাধিক আবেদন পত্রের ভেতর থেক সঠিক স্টার্টআপ নির্বাচনে সরাসরি সাক্ষাৎকার ও ডেমো উপস্থাপন সহ অত্যন্ত কঠিন পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে আয়োজকদের। এরপর নির্বাচিত সফল স্টার্টআপগুলোর জন্য ছিলো চার মাসের তীব্র ও কঠোর প্রশিক্ষণ। এছাড়াও, ‘জিপি অ্যাকসেলেরেটর’র স্টার্টআপগুলোকে ব্যবসা শুরু করার প্রাথমিক বিনিয়োগ হিসেবে ১১ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। স্টার্টআপগুলো সুযোগ পেয়েছে জিপি হাউজের ভেতর কাজ করার এবং তাদের ব্যবসার আরও দ্রুত প্রবৃদ্ধিতে এ খাত সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগের। দলভিত্তিক ও নির্দিষ্ট মেয়াদকালীন এ কর্মসূচি স্টার্টআপগুলোকে সমর্থ ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার এবং পরিশেষে তাদের নিজেদের প্রচেষ্টায় দ্রুত টেকসই প্রবৃদ্ধির সুযোগ করে দিবে।

 

Share This:

*

*