বিশ্ব জয় করার মতো প্রযুক্তি দক্ষতা রয়েছে আমাদের তরুণদেরও’- জাতীয় হ্যাকাথন ২০১৬ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত পুলিশ স্টাফ কলেজ (পিএসসি) কনভেনশ হলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক বলেন হ্যাকাথনের মধ্য দিয়েই তৈরি হয়েছে ম্যাসেঞ্জারের মতো ফেসবুক নানা ধরনের ফিচার। আমরা চাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে এই হ্যাকাথন থেকে এমন কিছু উদ্ভাবন হোক যা বিশ্বকে তাঁক লাগিয়ে দেয়। প্রতিমন্ত্রীর সুন্দর একটি ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে শুরু হয় জাতীয় হ্যাকাথন।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ তত্বাবধায়নে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে দেশের তরুণ সমাজ। তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে সরকার এমডিজির মতো এসডিডিজি বাস্তবায়নেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করতে চায়। এই আয়োজন সেই লক্ষ্য ত্বরানিত করবে। এজন্য আমরা টানা দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় হ্যাকাথনের আয়োজন করেছি। সারাবিশ্বে আমাদের এই হ্যাকাথন অন্যতম সেরা হ্যকাথন। এ বিশাল আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আয়োজনে শুরু হওয়া দুই দিনের জাতীয় হ্যাকাথনে সারাদেশের প্রায় ২০০০ প্রোগ্রামার, ফ্রিল্যান্সার, শিক্ষার্থী, অ্যাপ নির্মাতা অংশ নিয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে নির্বাচিত দশটি বিষয়ের উপর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের হ্যাকাথন। কৃষি উৎপাদন, নবজাতক ও শিশু, সড়ক দূর্ঘটনা, শিক্ষায় মানসম্মত শিক্ষক, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, জ্বালানি সক্ষমতা, শহরের পরিবেশ, টেকসই পর্যটন, সামুদ্রিক সম্পদ ও দূর্নীতি- এসডিজির এই দশটি লক্ষ্য অর্জনে যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা কীভাবে প্রযুক্তির মাধ্যমে মোকাবেলা করা যায় ৩৬ ঘণ্টাব্যাপী প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা সলিউশনের প্রোটোটাইপ (নমুনা সমাধান) তৈরি করবেন।
আজ সকালের উদ্বোধনী আয়োজনে স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি মিনা মাসুদ উজ্জামান বলেন, ২০ ফ্রেবয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২১ মার্চ চলে এই কার্যক্রমের নিবন্ধন কার্যক্রম। প্রথমিক আবেদনের ভিত্তিতে নির্বাচিত ৩৭০টি প্রগ্রোমারদের দলকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বেসিসের পরিচালক আশরাফ আবিরের সঞ্চালনায় জাতীয় হ্যাকাথনের আয়োজন সহযোগী বাংলালিংক-এর এমডি এবং সিইও এরিক অস্ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আমাদের যে অঙ্গীকার তারই অংশ হিসেবে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করতে এবং মেধাবীদের উজ্জল ভবিষ্যত গড়তে বাংলালিংক এই মহৎ উদ্যোগের গর্বিত অংশীদার হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, দেশের সব খাতের ডিজিটালকরণের জন্য এটি একটি অন্যতম উদ্যোগ। এই অংশগ্রহণকারীরা দেশের ভবিষ্যত, তাদের প্রতিভা এবং নতুনত্বকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ সত্যিই ডিজিটাল প্রজন্মে পরিণত করতে সক্ষম হবে।
হ্যাকাথনের দশ বিভাগে বিজয়ীরা পুরস্কার হিসেবে পাবেন অর্থ, সম্মাননাসহ আরও নানা সুবিধা। যেমন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপসহ সকল বিজয়ীদের দেওয়া হবে ১০ লাখ টাকা, বাংলালিংকের পক্ষ থেকে প্রত্যেক চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য রয়েছে ৫০ হাজার করে মোট পাঁচ লাখ টাকা এবং প্রথম রানারআপদের প্রত্যেকের জন্য একটি করে ট্যাব। ফেসবুক দিচ্ছে ৮০ হাজার ডলারের ফেসবুক স্টার্ট সুবিধা এবং কিউবি পাঁচ মাসের ইন্টারনেট সুবিধাসহ দশ চ্যাম্পিয়ন দলকে দেবে মোডেম। এ ছাড়াও সেরা উদ্ভাবনগুলোকে বাস্তবায়নের জন্য আইসিটি বিভাগ ভবিষ্যতে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করবে।
আরো বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এই http://hackathon.ictd.gov.bd/ ঠিকানায়।