দেশে ১ হাজার উদ্ভাবনী প্রকল্প তৈরিতে কাজ করছি-পলক

দেশে উদ্ভাবনীমূলক ও আন্তর্জাতিকমানের উদ্যোগ তৈরির লক্ষ্যে এবং বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক বাজারে এসব উদ্যোগকে নিয়ে যেতে আইসিটি ডিভিশন, বেসিস, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ ক¤িপউটার কাউন্সিল (বিসিসি) যৌথভাবে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘কানেক্টিং স্টার্টআপস বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজনে ইনকিউবেশন ও টেলিকম পার্টনার হিসেবে বাংলালিংক এবং অন্যান্য সহযোগি হিসেবে রয়েছে ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, গ্যাপ এবং কিজকি। মঙ্গলবার অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার যাচাই-বাছাই পর্বের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।

এ উপলক্ষ্যে বিস্তারিত জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বেসিস সভাপতি ও ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জেনারেল পার্টনার শামীম আহসান, বাংলাদেশ ক¤িপউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম এবং বাংলালিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস্ বক্তব্য রাখেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আইসিটি ডিভিশন, বেসিস, বিসিসি, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাবৃন্দ।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গত ১৮ অক্টোবর জনতা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের উদ্বোধন করা হয়। এই পার্কে যাতে আন্তর্জাতিকমানের উদ্যোগ গড়ে উঠে, বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি তৈরি হয় তার জন্যই আমরা কানেক্টিং আয়োজন করি। এতে ৪ শতাধিক আবেদন পড়েছে, যা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। আমরা দেশে ১ হাজার উদ্ভাবনী প্রকল্প তৈরিতে কাজ করছি। যেগুলো নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের বড় অবস্থান নেওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমরা প্রত্যাশা করি এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তেমনই কিছু উদ্ভাবনী প্রকল্প বেরিয়ে আসবে।

আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের উচ্চগতির ইন্টারনেট, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, বড় কনফারেন্স রুম ব্যবহারের সুবিধাসহ তাদের বিনিয়োগ সমস্যা সমাধান, মানোন্নয়নসহ উদ্যোগটি যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া স্টার্টআপগুলোকে নিয়ে পরবর্তীতে আরও কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

বেসিস সভাপতি ও ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জেনারেল পার্টনার শামীম আহসান বলেন, আইসিটি ডিভিশন ও বেসিস দেশে ১ হাজার উদ্ভাবনী প্রকল্প তৈরিতে কাজ করছে। এগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটালসহ সম্ভব আরও কিছু বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব উদ্যোগকে সিলিকন ভ্যালির কোম্পানিগুলোর সংস্পর্ষে আনাসহ তাদের বিনিয়োগ, মেন্টরিংসহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা পেতে সাহায্য করবে বেসিস।

বাংলালিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস্ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমাদের সহযোগিতা ও কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটি (সিআর) এর আওতায় দেশে তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করাই আমাদের লক্ষ্য। তাদের উদ্যোগকে সফল করতে আমরা আইসিটি ডিভিশনের বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা করেছি। এর মাধ্যমে আমরা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ডিজিটাল ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করছি, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আইডিয়া ও স্টার্টআপসকে মেন্টরিংসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে। আমরা বিশ্বাস করি এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে আইসিটি হাব হিসেবে তৈরি ও ডিজিটাল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা জনতা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে বাংলালিংকের সহযোগিতায় ডিজিটাল ইনকিউবিটের সাপোর্ট সেন্টারে এক বছরের জন্য বিনামূল্যে জায়গা বরাদ্ধ পাবে। পাশাপাশি বিজয়ীরা আর্থিক অনুদান এবং মেন্টরিংয়ের সুযোগ পাবে। এছাড়া নির্বাচিত আরও অর্ধশত উদ্যোগ এই ডিজিটাল ইনকিবিউটরে জায়গা বরাদ্ধ নিতে পারবে।

অনুষ্ঠানে বাংলালিংকের সৌজন্যে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ৪ শতাধিক সিম বিতরণ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের পর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ‘হাউ টু বিকাম এ উইনার’, ‘ফান্ড রাইজিং’ ও ‘নেক্সট জেনারেশন মার্কেটিং’ শীর্ষক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা আলোচক হিসেবে ছিলেন।

Share This:

*

*