বাংলাদেশে ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরির বিষয়টি উঠে আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তারা ব্যাংকগুলোকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেইজে প্রবেশাধিকার দেয়ার চেষ্টা করছে, যাতে তারা নতুন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের পাশাপাশি পুরনো একাউন্টগুলোও পুনরায় যাচাই করতে পারে। খবর বিবিসি বাংলার
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট বা বিআইবিএমের একটি গবেষণায় বলা হয়, যেসব মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট দিয়ে যেসব প্রতারণা হয়, তার প্রায় পুরোটাই হয় ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে।
বিআইবিএমের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। টাকা লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে এই মোবাইল ব্যাংকিং যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছে, একইসাথে এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে প্রতারণা, চাঁদাবাজী এবং মুক্তিপণ আদায়েরও ঘটনা ঘটছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহের একজন বাসিন্দা বলছিলেন, গত বছর তিনি এভাবে একটি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হয়েছিলেন।
“আমাকে ফোন করে বলে যে আপনি একটা পুরস্কার জিতেছেন, পুরস্কারের টাকাটা নেয়ার জন্য কিছু কর দিতে হবে। এরপর আমি বিকাশের মাধ্যমে ২৯০০০ টাকা পাঠাই।”
এই ভুক্তভোগী অবশ্য পরে ভয় পেয়ে আর পুলিশের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেননি।
বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আলম বলছেন, ২০১৪ সালে এ ধরণের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে প্রায় ৫০০ টি অভিযোগ এসেছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অভিযোগের ৯৯% ক্ষেত্রেই দেখা গেছে প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে।
“বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তারা মানুষকে ফোন করে, তারপর তারা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ফলস একাউন্টে টাকাটা নেয়ার চেষ্টা করে। একদল সিএনজি বা গাড়ি চুরি করে টাকা পাঠাতে বলে। আবার কিছু টিভিতেও বিজ্ঞাপন দেয়, যে তারা বিভিন্ন তাবিজ দিয়ে মুশকিল আসান করবে। তারপর মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট দিয়ে টাকা নেয়।” বলেন মি. আলম।