এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বৃহত্তম সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (অ্যাপিকটা), এই অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি অ্যাপিকটা সম্ভাবনাময় ও সফল উদ্যোগ, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার স্বীকৃতি দিতে প্রতিবছর অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করে থাকে। এই অ্যাওয়ার্ড তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অস্কার হিসেবে বিবেচিত। আনন্দের বিষয় হলো, ২০১৭ সালে বাংলাদেশেই আয়োজিত হবে এই অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সদস্য হিসেবে এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা ও রফতানি বাজার বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশ যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যতম পরবর্তী গন্তব্যস্থল তা দেখিয়ে দেওয়া যাবে।
রাজধানীর লেকশোর হোটেলে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ এ বাংলাদেশের অর্জন ও ২০১৭ সালের অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডের আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচিত হওয়ার গৌরবোজ্জ্বল অর্জন উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম, বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম আহমেদ, বিসিএস সভাপতি আলী আশফাক, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা ও পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী আখতারুজ জামান খান কবির।
অনুষ্ঠানে অ্যাপিটকা অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বেসিসের সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, পরিচালক উত্তম কুমার পাল, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, সৈয়দ আলমাস কবীর, রিয়াদ এস এ হোসেনসহ বেসিসের সাবেক কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দ, বেসিসের সদস্যবৃন্দসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালে অ্যাপিকটার সদস্য হওয়া বেসিসের জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন। জাপান থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ১৬টি দেশের প্রতিযোগিতার এই আয়োজন বাংলাদেশকে বিরল সম্মান এনে দিচ্ছে। এতে প্রায় দুই শতাধিক প্রতিযোগি ১৭টি ক্যাটেগরিতে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে থাকে। এই উপলক্ষে এই অঞ্চলের প্রায় ছয় শতাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসবে। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করাতে ও রপ্তানীর বাজার বাড়াতে এই আয়োজন আমাদেরকে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে।
সম্প্রতি তাইওয়ানের তাইপেতে ৫ ডিসেম্বর সমাপ্ত অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৭ সালের আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করা হয়। অ্যাপিকটা কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এর সদস্যভুক্ত ১৬টি দেশের প্রতিনিধিদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পরবর্তী বছরের জন্য আয়োজক দেশের নাম হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচন করা হয়। সেখানে বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বাংলাদেশে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড আয়োজন নিয়ে একটি উপস্থাপনা পেশ করেন।
তাইওয়ানের ২০১৬ সালের এই আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে প্রধান বিচারক হিসেবে মোস্তাফা জব্বার এবং তার সাথে আরও ৩ জন বিচারক যথাক্রমে রাসেল টি আহমদ, এম রাশিদুল হাসান এবং মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল প্রথমবারের মতো যোগ দেন। বাংলাদেশের সমš^য়ক হিসেবে উত্তম কুমার পাল এতে যোগ দেন। বাংলাদেশ থেকে মোট ১৪টি প্রতিযোগি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় এবং ক্রান্তি অ্যাসোসিয়েটস সম্মাননা পুরস্কার পায়।
আগামী ২০১৭ সালে বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার পুরো প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করবেন। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য সম্মান।
বাংলাদেশ ছাড়াও অ্যাপিকটার সদস্য দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, ব্রনেই দারুসসালাম, চীন, চীনা তাইপে, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং নেপাল।