গত কয়েক বছরে বেশ কিছু সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং আমরা ধীরে ধীরে সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু যতখানি সাবধানতা আমাদের অবলম্বন করা উচিত ততটা এখনো আমরা করছি না বলে মনে করেন বাংলাদেশী সাইবার সিকিউরিটি ব্র্যান্ড রিভ অ্যান্টিভাইরাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জিত চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “আমরা অনেক প্রতিষ্ঠান দেখতে পাই যারা সাইবার সিকিউরিটি অনেক বেশি সচেতন এবং এর পেছনে ভালো বিনিয়োগ করছেন। অন্যদিকে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও অনেক বেশি যারা কোনো অ্যান্টিভাইরাসই ব্যবহার করছে না কিংবা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাসকেই নিরাপদ মনে করছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে ফিশিং লিংক প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকহারে। যার কারণে আমরা অনেক বেশি সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছি।” শনিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারস্থ সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে রিভ অ্যান্টিভাইরাসের নিজস্ব কার্যালয়ে এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জিত চ্যাটার্জি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন।
“প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা ইন্সটলেশন, উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক পুরষ্কার, ব্যবহারকারীর তালিকায় প্রতিনিয়ত নতুন দেশ ও প্রতিষ্ঠান যুক্ত হওয়া – এমন আরও নানা অর্জন আমাদেরকে দারুণভাবে আশান্বিত করছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) কিংবা বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার–এর মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠান যখন বাংলাদেশ মার্কেটের শীর্ষে থাকা কোনো অ্যান্টিভাইরাস ব্র্যান্ড ছেড়ে আমাদের অ্যান্টিভাইরাস নিচ্ছে তখন তা আমাদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।’ সঞ্জিত চ্যাটার্জি আরও যোগ করেন, ‘আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে আয়ারল্যান্ড পুলিশ ডিপার্টমেন্টও রিভ অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করছে।”
বাংলাদেশি বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমসের তৈরি রিভ অ্যান্টিভাইরাস ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ মার্কেটে যাত্রা শুরু করে। ২০১৭ সালের মার্চ থেকে এটি রপ্তানি হচ্ছে ভারতে এবং নেপালে রপ্তানি হচ্ছে মে থেকে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত ব্যবহারকারী বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যে, ইউরোপ, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতে।
১৭ তম অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। এতে সিকিউরিটি ক্যাটাগরিতে ফার্স্ট মেরিট অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় বাংলাদেশী এই সাইবার সিকিউরিটি ব্র্যান্ড। এর আগে রিভ অ্যান্টিভাইরাস পেয়েছে ভাইরাস বুলেটিন এবং অপসওয়াট স্বীকৃতি। মাইক্রোসফট ভাইরাস ইনফরমেশন অ্যালায়েন্সেরও সদস্য রিভ।
কেন অন্য সব অ্যান্টিভাইরাস থেকে রিভ আলাদা, প্রশ্নের জবাবে সঞ্জিত চ্যাটার্জি বলেন, “এই উপমহাদেশের কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের একটি প্রধান সমস্যা হলো অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করলে কম্পিউটার স্লো হয়ে যাওয়া। আমাদের টার্বো স্ক্যান টেকনোলোজি কম্পিউটার স্লো না করেই অনেক বেশি ভাইরাস ও ম্যালওয়ার প্রতিরোধে কার্যকর। ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের জন্য আমাদের রয়েছে দারুণ সব প্যাকেজ। অ্যাডভান্সড প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচারের মাধ্যমে বাবা-মা’রা তাঁদের সন্তানের অনলাইন কার্যকলাপের উপর নজর রাখতে পারবেন এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। একই সুবিধা পাবেন কোনো প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজর বা আইটি অ্যাডমিন। ফিশিং ও স্প্যাম প্রতিরোধে রিভ দারুণ কার্যকর। বাংলাদেশের বাজারে আর যে সকল অ্যান্টিভাইরাস আছে তাদের মূল প্রতিষ্ঠান এখানে সরাসরি উপস্থিত নেই, যে কারণে গ্রাহকরা সাপোর্ট পেতে সমস্যার সম্মুখীন হন। আমরা নিজেরা এখানে উপস্থিত আর বাংলাদেশে একমাত্র আমরাই দিচ্ছি দিনরাত ২৪ ঘন্টা গ্রাহকসেবা।”
বর্তমান উল্লেখযোগ্য ব্যবহারকারীর তালিকা জানতে চাওয়া হলে সঞ্জিত চ্যাটার্জি ডিপিডিসি, ডেসকো ছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের হেডকোয়ার্টার, সিআইডি, কৃষি মন্ত্রণালয়, নারায়ণগঞ্জ ট্যাক্স অফিস, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ বেতার, বিইউবিটি, জাইকাসহ প্রভৃতি নাম উল্লেখ করেন। আসছে মার্চ মাসে এন্ড পয়েন্ট সিকিউরিটি’র ঘোষণা দেবে রিভ অ্যান্টিভাইরাস। বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের তালিকাটি তখন আরও দীর্ঘতর হবে বলে আশা করছে রিভ।
ব্যবহারকারীরা এখনও স্মার্টফোনের নিরাপত্তা নিয়ে খুব একটা সচেতন নন। কিন্তু ফোনের মাধ্যমে তথ্য চুরি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। একমাত্র রিভ অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহারকারীরা প্রতটি কম্পিউটার লাইসেন্সের সঙ্গে একটি করে মোবাইল সিকিউরিটি ফ্রি পাচ্ছেন। শুধু ভাইরাস থেকে নয়, ফোন চুরি কিংবা হারিয়ে গেলেও রিভ মোবাইল সিকিউরিটির মাধ্যমে তা খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
সারাদেশে ৫০০টিরও বেশি কম্পিউটার শপে রিভ অ্যান্টিভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে। রয়েছে অনলাইন থেকে কেনার সুবিধা। ট্রায়াল ডাউনলোড কিংবা যেকোনো জিজ্ঞাসায় www.reveantivirus.com ভিজিট করতে পারেন, কল করতে পারেন ০১৮৪৪০৭৯১৮১ নম্বরে কিংবা ই-মেইল করতে পারেন sales@reveantivirus.com –এ।