স্বপ্নগুলি অনেক বড়, আরও বড় ছিলো জীবনের স্বপ্ন পূরণে প্রচেস্টার মাত্রা। কখনো ডিজিটাল গ্রাম, কখনও বা পায়ের জুতা থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন। তবে এখানেই শেষ নয়, জীবনকে বিজ্ঞান- প্রযুক্তি দিয়ে উন্নত করার প্রয়াসে কোন ঘাটতি ছিলো না। ঠিক এমন স্বপ্ন পূরনের এক মঞ্চ- স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেন। ৪ টি ভিন্ন বিভাগে বিজয়ী ঘোষণার মাধ্যমে ৩৬ ঘন্টার আন্তর্জাতিক এই হ্যাকাথনের সমাপ্তি হলো। ক্ষুদে উদ্ভাবকদের চিন্তার মেলায় নতুন স্বপ্নের বিকাশ তাই এখন সময়ের অপেক্ষা। ভিন্ন ভিন্ন এই প্রজেক্টগুলির সঠিক বাস্তবায়নে হয়ত উন্মোচন হতে পারে নতুন কোন ভবিষ্যতের।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত আয়োজিত হলো স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেন। এর আগে, সারা দেশ থেকে ৮৫ টির অধিক আগত প্রায় ৪০০ টির অধিক প্রজেক্ট থেকে ১০০ টি প্রজেক্ট নিয়ে ব্যুট ক্যাম্প সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে শীর্ষ ৩৫ টি প্রজেক্ট নিয়ে ফাইনাল হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত হয়।
৪ টি ভিন্ন বিভাগে বিজয়ী প্রজেক্টগুলি হলোঃ সার্চ বোট, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ( বেস্ট ইউজ অফ ডাটা ), ফ্লোটিং সিটি, উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ ( মোস্ট ইন্সপাইরেশনাল ), অক্সোমাস্ক, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ( বেস্ট মিশন কনসেপ্ট), ইকো ফ্রেন্ডলি সোর্স অফ ইলেক্ট্রিসিটি এনার্জি , ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুল ( গ্যালাটিক ইমপ্যাক্ট) ।
সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেসিস এর সভাপতি মোস্তফা জব্বার, স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেনের প্রধান বিচারক রফিকুল ইসলাম রাওলি সহ স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেনের মেনটর এবং বিচারকবৃন্দ।
রফিকুল ইসলাম রাওলি বলেন, আমাদের বাচ্চারা বিশ্বমানের প্রজেক্ট করে সারা বিশ্বে সাড়া ফেলতে পারবে যা এই বিচার করতে যেয়ে আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, এমন উদ্ভাবনের মেলা দেখে আমি বিস্মিত। বাংলাদেশের তরূন প্রজন্ম বিশ্ব দরবারে আরও বিস্ময়কর উদ্ভাবনের দৃস্টান্ত স্থাপন করবে বলে আমরা আশা করি।
তিনি আরও বলেন, এমন মেধার মেলা এক নতুন অধ্যায়ের সৃস্টি করেছে। সামনের দিনগুলিতে আরও অনেক উদ্ভাবনের দেখা পাবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
এছাড়াও তিনি হ্যাকাথন প্রাঙ্গণ ঘুরে সকল প্রজেক্ট নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বিস্তর আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল হাসান অপু বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো হলেও প্রতি বছর আমরা এই আয়োজন করবো। স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেনের এই আয়োজন ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হলেও এটা ২০১৬ সালের ই আয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বছরের অক্টোবর নাগাদ আবারও এই আন্তর্জাতিক হ্যাকাথনের আয়োজন করা হবে।
স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেন’ হলো নাসার ওপেন ডাটা নির্ভর ৩৬ ঘন্টার একটি হ্যাকাথন এবং পরিচালনায় সহায়তা করে নাসার সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান ‘সেকেন্ড মিউজ’ (Second Muse) । তিনটি ভিন্ন বিভাগে ( ১ম-৪র্থ শ্রেণী, ৫ম- ৮ম শ্রেণী, ৯ম – দ্বাদশ শ্রেণী ) শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই আয়োজন করা হয়। জয়ী প্রতিটি দল পরবর্তীতে ৫ টি দেশে আয়োজিত এই হ্যাকাথনের বিজয়ীদের সাথে তাদের দক্ষতার প্রমান দেওয়ার সুযোগ পাবেন। সর্বশেষ চূড়ান্ত বিজয়ীদের স্পেস অ্যাপস নেক্সট জেন, সেকেন্ড মিউজের ওয়াশিংটন ডিসির প্রধান কার্যালয় থেকে সার্টিফিকেট এবং পুরষ্কার প্রদান করা হবে।
রাজধানীর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে জানুয়ারির ২৭ এবং ২৮, ২ দিনব্যাপী ৩৬ ঘন্টার হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত হলো। বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মত আয়োজন করা হলেও, এর আগে বিশ্বের ৫ টি দেশ আন্তর্জাতিক এই হ্যাকাথনের আয়োজন করেছে। আয়োজনে সহযোগিতা করছে মাইক্রোসফট(প্লাটিনাম স্পন্সর), পিবাজার ডট কম, রিটস অ্যাডস (গোল্ড স্পন্সর), বাগডুম( স্ট্রেটেজিক পার্টনার), ডাটা সফট(এন্টারপ্রাইজ পার্টনার),স্পেস অ্যাপস বাংলাদেশ( সহযোগিতায়), রাইজ আপ ল্যাবস(সহযোগিতায়), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি( ভ্যেনু পার্টনার) ।