শেষ হলো ইএটিএল-প্রথম আলো অ্যাপস প্রতিযোগিতা ২০১৬ এর বুটক্যাম্প। সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। উল্লেখ্য দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য মোবাইল অ্যাপলিকেশন (অ্যাপ) তৈরির সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এই ইএটিএল-প্রথম আলো অ্যাপস প্রতিযোগিতা।
গতকাল বুটক্যাম্পের উদ্বোধন করেন সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ ভিন্ন পরযায়ে চলে গেছে। এটি সম্ভব করেছো তোমরাই। তোমরা যা করতে চাও তাই আসল পথ। ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে তোমাদের মত তরুণদের হাত ধরে। তোমরা এমন অ্যাপস বানাও যেটি মানুষের সময়, টাকা, কষ্ট কমিয়ে দেবে। তাহলে বাংলাদেশে আসবে অন্যরা।’
এ বুটক্যাম্পের বিশেষ অতিথি জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের তরুণরা সব করতে পারে। তরুণদের এই প্রতিযোগিতা আসলেই প্রশাংসা করার মত। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আজ এখানেই দাড়িয়ে রয়েছে। এদের কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে।’
এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজিস লিমিটেডের (ইএটিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান বলেন, অ্যাপ বিষয়ে প্রতিযোগীদের যাতে কোনো রকম দূর্বলতা না থাকে, তাই এ আয়োজন করা হয়েছে। এই ক্যাম্পে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কাছে অ্যাপ সম্পর্কিত বিষয়ে যে কোনো সমস্যার সমাধান জানার সুযোগ পেয়েছে প্রতিযোগীরা। আমাদের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সারা দেশ থেকে মেধাবীদের খুঁজে বের করে এমন একটি অ্যাপ বানাতে চাই যেটির মাধ্যমে পুরো বিশ্বে তাঁক লাগানো যায়। এটি শুধু প্রতিযোগিতা নয়, নিজেদের তুলে ধরা এবং দক্ষতা বাড়ানোর একটি মাধ্যম। বুটক্যাম্পের পর এ মাসের ২৫ ও ২৬ তারিখে নির্বাচিত প্রতিযোগীরা বিচারকদের সামনে নিজেদের ধারণাপত্র উপস্থাপন করবেন।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন,‘তোমরা এদেশের অর্থনিতি বদলে দিয়েছো। তোমাদের উপর বাংলাদেশের অর্থনিতি টিকে আছে। তোমাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বেসিসের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, প্রথম আলোর যুগ্ন ফিচার সম্পাদক পল্লব মোহাইমেন ও প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির প্রধান মুনির হাসান।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে প্রতিযোগীদের জন্য ছিল ৯ টি সেশন। এসব সেশনের মধ্যে অ্যান্ডয়েড অ্যাপ লাইফ সাইকেল, গেম ডিজাইন, ইউএক্স ইউআই, অ্যাপ ব্যাকেন্ড, অ্যাপ মনিটাইজেশন ও অ্যান্ডয়েড পুশ নোটিফিকেশন উল্লেখযোগ্য। এসব সেশনে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। তারা মোবাইল অ্যাপলিকেশনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এতে। এছাড়াও প্রতিযোগীদের এদিন অনুপ্রেরণামূলক কথা শোনান তথ্য-প্রযুক্তিতে সফল ব্যক্তিরা।
ইএটিএল-প্রথম আলো আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা চতুর্থবারের মতো শুরু হয়েছে গত ২৪ মে। এরপর সারা দেশের প্রায় ১০০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারণা চালানো হয়। একই সঙ্গে চলে অ্যাক্টিভেশন রাউন্ডও। পরবর্তী ধাপে সারা দেশ থেকে প্রাথমিকভাবে জমা পড়া ধারণাপত্রের মধ্য থেকে ৫০০টি ধারণাপত্র নির্বাচন করা হয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর। শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে এসব ধারণাপত্র জমা দেন।
প্রতিযোগিতায় সেরা অ্যাপের জন্য রয়েছে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার। সঙ্গে এবার যোগ হচ্ছে ট্রফি। এ ছাড়া প্রতি বিভাগে প্রথম অ্যাপ পাবে দুই লাখ টাকা।
বিশ্বব্যাংক ও কানাডা এবারের আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। প্রতিযোগিতা আয়োজনে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ ও চ্যানেল আই।