শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

যশোরে নির্মিত ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ এর উদ্বোধন করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (রোববার) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এই  সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটির উদ্বোধন করা হয়।  ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে একটি বিশ্বমানের আইটি পার্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাত্র ২ (দুই) বছরে যশোরের বেজপাড়া নাজিরশংকরপুর এলাকায় এ আইটি পার্কের নির্মাণ কাজ শেষ হলো।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের ঘোষণা দিয়ে আপনাদেরকে এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলাম। তারই অংশ হিসেবে যশোরে নির্মিত হলো এই সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে না পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। এজন্যই আমরা দেশের সুবিধাজনক বিভিন্ন স্থান চিহ্নিত করে এমন হাই-টেক পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সবসময় চেয়েছি প্রযুক্তিকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে। এর উন্নয়নের সুফল প্রতিটি মানুষের কাজে লাগাতে।
তিনি আরো বলেন, যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক শুধু নয়, আমরা প্রতিটি জেলায় পর্যায়ক্রমে এমন প্রযুক্তিভিত্তিক হাইটেক পার্ক গড়ে তুলবো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি  বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন ঢাকা মানেই বাংলাদেশ নয়। সেই কথাটিকে সত্য করতেই তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত জায়গায় তথ্যপ্রযুক্তিকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি ভোলার চর কুকরি-মুকরিতেই ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এর কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। এছাড়াও যশোরকে প্রথম ডিজিটাল জেলা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, বটম অব পলিসির জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে দর্শন তার জন্য এখন আর তরুণদের ঢাকায় এসে জুতা ক্ষয় করতে হবে না। এখন যশোরেই তথ্যপ্রযুক্তির ডিজিটাল হাব খুলে দিয়েছেন।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আইসিটি শিল্পের সুষম বিকাশ ও উন্নয়ন সাধন করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিলো। এই পার্কে আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধাসহ ১৫ তলা মাল্টি-টেন্যান্ট বিল্ডিং; আন্তর্জাতিক থ্রি-স্টার মানের আবাসন ও জিমনেসিয়ামের সুবিধাসহ ১২ তলা ডরমিটরি বিল্ডিং; একটি ক্যান্টিন ও এ্যাম্ফিথিয়েটার; ৩৩ কেভিএ পাওয়ার সাব-স্টেশন; ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট লাইন এবং অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এখানে এরইমধ্যে দেশি-বিদেশি ৫৫টি কোম্পানি স্পেস বরাদ্দ পেয়েছে। আইটি শিল্পকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে এবং সকলকে সম্পৃক্ত করতে সুলভ মূল্যে প্রতিটি হাই-টেক/আইটি পার্কে স্পেস দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও স্টার্ট-আপদের বিনামূল্যে স্পেস দেওয়ার মাধ্যমে নতুন উদ্যক্তা তৈরি হচ্ছে। এই পার্কে প্রায় ৫০০০ লোকের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগদান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব ইমরান আহমেদ এমপি, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক জনাব স্বপন কুমার সরকার। অনুষ্ঠানে যশোর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) জনাব হোসনে আরা বেগম এনডিসি, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-এর প্রকল্প পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, যশোরের জেলা প্রশাসক  মো. আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ।

Share This:

*

*