অবাণিজ্যিক এলাকায় আইটি কোম্পানিগুলোর অবস্থান প্রসঙ্গে বেসিস মিলনায়তনে আজ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান এবং বেসিস সচিব হাশিম আহম্মদ।
সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমন্ডি, মিরপুর ও উত্তরা থেকে অবৈধ প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ ও আবাসিক এলাকা থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাণিজ্যিক এলাকাতে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রাজউক ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মকর্তা গিয়ে উত্তরায় বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠান সলিউশন নাইন লিমিটেড এর অফিসে একই অভিযোগে তালাবন্ধ করে দিয়ে এসেছেন। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে উক্ত স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এভাবে কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এসব প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করলে তাদের ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীনই হচ্ছে না, বরং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ইতোপূর্বে একই কারণ দেখিয়ে উত্তরা এলাকায় অপর একটি প্রতিষ্ঠানে তালাবন্ধ করে দেওয়া হয়।
বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, আমেরিকা, ইউরোপ ও জাপানের মতো বিভিন্ন দেশের সাথে টাইমজোনের পার্থক্য রয়েছে। তাদের সাথে সময় মিলিয়ে কাজ করার জন্য অনেক অফিস ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হয়। তাছাড়া এসকল প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত জনবল মোটামুটি নিরবেই কাজ করে এবং এতে বহিরাগত মানুষের আনাগোনা বা কোলাহল হয়না বিধায় তাদের কাজের জন্য আবাসিক বা অবাণিজ্যিক এলাকাই ভালো।
বর্তমানে বেসিস এর ১১০০ সদস্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮০০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান ঢাকা শহরের অবাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থান করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। এসকল প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক জনবল কর্মরত আছে। গত অর্থ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী অবাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত এসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয় বাজারে বিনিয়োগ করেছে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ এবং আইটি ও আইটিইএস খাত থেকে রপ্তানি আয় করেছে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত তথা বেসিস সদস্যবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বেসিস তাদের কিছু দাবিও তুলে ধরেন-
প্রয়োজনীয় সংখ্যক সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি না হওয়া পর্যন্ত অবাণিজ্যিক এলাকায় ব্যবসা পরিচালনার বিষয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে অব্যাহতি দেয়ার জোর দাবী জানিয়েছে বেসিস।
বেসিস সভাপতি পরিশেষে বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তন্মধ্যে ভৌত অবকাঠামো তথা ২৮টি হাইটেক পার্ক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব পার্ক নির্মাণসহ ঢাকাতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ করা গেলে সফটওয়্যার ও আইটিইএস প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবসা পরিচালনার জন্য কোনো অবাণিজ্যিক অফিস স্পেস ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না।
তাই, প্রয়োজনীয় সংখ্যক সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি না হওয়া পর্যন্ত অবাণিজ্যিক এলাকায় ব্যবসা পরিচালনার বিষয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য রাজউক চেয়ারম্যান, মাননীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এবং সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ এবং একইসাথে এই অব্যাহতি সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে জারি করার জন্য অনুরোধ অনুরোধ জানান বেসিস সভাপতি।