‘রক্তজবাদের কেউ ভালবাসেনি’ -কথাশিল্পী মৌলি আজাদের একটি দীর্ঘ গল্প ।কিন্তু কারা এই রক্তজবা ? কেনই বা তারা মানুষের ভালবাসা থেকে বঞ্চিত ? মানুষের ভালবাসা না পাওয়াই কি তাদের হৃদয়ের একমাত্র যন্ত্রনা ? সমাজের কোন অধিকারটাই বা পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করতে পারছে রক্তজবারা ? জীবনের অনিবার্য- আকাংিঙ্খত যেসব অধিকার মানুষের, আদৌও কি রক্তজবাদের কাছে সেইসব অধিকারগুলো চেনা ? অপ্রাপ্তি আর বঞ্চনাকে কি রক্তজবারা নিজেদের কপাল লিখন বলেই মেনে নিয়েছে ? আর রক্তজবাদের চারপাশের নিজ স্বার্থের খোঁপে বন্দী মানুষগুলো বুকে হাত দিয়ে বলতে পারে কি- ভাবছি আমরা তাদের কথা ? আর তাই এই দীর্ঘ গল্পের অনেক রক্তজবার মধ্যে একজন রক্তজবা সালেহার মুখ দিয়েই বের হয়ে যায় সকল রক্তজবার ভিতরে জমে থাকা পেঁজা তুলার মত পঞ্জীভ’ত ক্ষোভ । চারপাশের মানুষগুলোর কাছে যা অনেকটা হঠাৎ অগ্নি বিস্ফোরনের তুল্য মনে হয়। গল্পের চতুর ,তর্কবাগীশ ,স্বার্থপর মানুষগুলো তাই রক্তজবা সালেহার অভিযোগ তথা ক্ষোভের উত্তর দেবার মত ভাষা সহসাই খুঁজে পায়না ।বাস্তবে আমরাও কি পারবো রক্তজবাদের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বয়ে যাওয়া নানা ঝঞ্ছা আর সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মত বিক্ষুব্ধ জীবনের হাজারো প্রশ্নের জবাব দিতে ? তাদের জন্য কি সাজানো আছে কেবল অপমান আর করুনা ? পেরেছি কি আমরা তাদের ভালবাসা দিতে বা নিজেদের কাছে টেনে আনতে ? আমাদের সমাজের রক্তজবাদের নানা কথার সাথে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতিকে ভিন্নধর্মীভাবে গল্পের আকারে এক ক্যানভাসে সাজিয়েছেন কথাশিল্পী মৌলি আজাদ । ঝরঝরে মেদহীন ভাষায় লিখিত মৌলি আজাদের দীর্ঘ গল্প ‘রক্তজবাদের কেউ ভালবাসেনি’ । আশা করা যায় এ বইটি পাঠ করে পাঠক পাবে শিল্পের নির্যাস আর নতুন ভাবে জীবন-মানুষ-সর্ম্পক-চারপাশকে উপলব্ধি করার প্রয়াস ।