ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের হস্তক্ষেপে শারিরিক প্রতিবন্ধী মাহিনুরের দুইটি সিম নিবন্ধিত হয়েছে। আজ একটি দৈনিক পত্রিকার মাধ্যেমে তিনি জানতে পারেন গৃহকমী মাহিনুর জন্মগত ভাবে নিজের হাত না থাকায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে পারছেন না। এর পরপরই তিনি ব্যবস্থা নেন এবং মাহিনুর সিম নিবন্ধনে সক্ষম হন। এ নিয়ে তারানা হালিম তার ফেসবুক পেজে মাহিনুরের সিম কিভাবে নিবন্ধিত হলো তার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত-
আজ আমি বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকা মারফত একটি খবর (খবরের লিংকঃ http://goo.gl/7YUEfY) দেখে আমি খুবই ব্যথিত হই। আমার দেশের একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী যার ডান হাতটা কাটা ছিল তিনি বায়োমেট্রিক্স বা আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন করতে সক্ষম হন নাই। খবরটি দেখে আমি তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। মেয়েটিকে আমি আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন কার্যক্রমের মূল কার্যালয়ে পাঠাই এবং সেখানেই তার সিমের নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করবার জন্য অনুরোধ করি। মেয়েটিকে জাতীয় পরিচয় পত্র অধিদপ্তরে নিয়ে আসা হয় কিন্তু তিনি সাথে করে তাঁর নিজের ছবি নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলেন, উক্ত অফিস থেকেই তাঁর ছবি তুলে তৎক্ষণাৎ প্রিন্ট আউট করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং এখন মেয়েটি তাঁর দুইটি সিমেরই নিবন্ধন সপমূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন জেনে আমি খুশি হয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মেয়েটিকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, “আপনি কি আপনার সিম নিবন্ধন করার জন্য কাস্টমার কেয়ার সেন্টার গুলোতে গিয়েছিলেন কিনা?” তখন মেয়েটি উত্তর বলেছিলেন, না, উনি কাস্টমার কেয়ার গুলোতে যান নাই। উনি শুধুমাত্র একটি মোবাইল অপারেটরের রিটেইলারের (রাস্তার পাশের) কাছে গিয়েছিলেন। অপর আর একটি সিমের জন্য উনি কোথায়ই জান নাই।
অথচ আমাদের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম/রিম নিবন্ধন কার্যক্রমের শুরু থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধীরা কিভাবে সিম/রিম নিবন্ধন করবেন এবং তারা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন সে ব্যপারে অত্যন্ত সচেতন ছিলাম যা শুরু থেকে আজ পর্যন্ত করে আসা আমাদের সকল মিটিং মাইনিটসেই ছিল। এছাড়া আমরা প্রতি শনিবারকে “শারীরিক প্রতিবন্ধী অগ্রাধিকার দিবস” হিসেবে ঘোষণা করেছি। এই দিনে অর্থাৎ প্রতি শনিবারে শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরকে সকল মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার গুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সিম/রিম নিবন্ধন সম্পন্ন করা হবে এবং যারা সমস্যার সম্মুখীন হবেন তাদের সমস্যাগুলো তৎক্ষণাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন বিভাগের সাথে মিলে ঠিক করে দিবেন। অর্থাৎ অপারেটররাও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে যথাযথ ভাবে অবিহিত। আমরা এবং আমাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সর্বদায় সর্বক্ষেত্রে আমাদের শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সমস্যাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। এছাড়া বিটিআরসি থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল, এই মেয়েটির মতো বিশেষ পরিস্থিতির সিম/রিম গুলো অপারেটরদের নিজস্ব কাস্টমার কেয়ার গুলোতে যেয়ে সম্পন্ন করতে হবে।
মেয়েটিকে আরও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনি কাস্টমার কেয়ার হেল্প লাইন নাম্বার ১২১ এ ফোন দিয়েছিলেন কিনা কিন্তু এক্ষেত্রেও উনি না সূচক উত্তরই দেন। পরে উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি যে বাসায় কর্মরত আছেন, ওই বাসার মালিক কেন, উনি কোন ধরনের সাহায্য করেন নাই আপনার এই সমস্যার ব্যপারে? তখন মেয়েটি তাঁর উত্তরে জানান, উনি যে বাসায় কর্মরত আছেন উনিই সেই সাংবাদিক যিনি উক্ত নিউজটি করেছেন উক্ত সংবাদপত্রে এবং উনি কোন ধরনের সহায়তা এই মেয়েটিকে করেন নাই তাঁর সিম/রিম নিবন্ধনের ব্যপারে।
আসলে এতো কথা বলার দরকার হতো না যদি উনারা আর একটু সচেতন হতেন, আর একটু সহায়তার মনোভাব নিয়ে সরকারকে সাহায্য করতেন। মেয়েটি তাঁর সিমটি এখন নিবন্ধন করতে পেরেছেন জেনে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি কিন্তু একই সাথে উক্ত সংবাদটি আমাকে ব্যথিতও করেছে। উনারা আর একটু সচেতন হলেই আমাদের সার্বিক সফলতার হারও বৃদ্ধি পেতো।
পরিশেষে আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন বিভাগকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই এতো অল্প সময়ের মধ্যেই সমস্যাটির সমাধান করার জন্য।