পোর্টেবল সয়েল টেস্টিং ডিভাইস – যার সাহায্যে একজন কৃষক তার ফসলের মাঠে বসেই মাটি পরীক্ষা করে ফসলের মাঠের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বর্তমানে ফসলের মাঠের মাটি পরীক্ষার যে জন্য যে পদ্ধতি মানা হয় তাতে রয়েছে অনেক ঝক্কি ঝামেলা। কৃষক মাঠ হতে মাটির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে নিয়ে যেতে হয় এর পর একটি নিদিষ্ট ফি এর বিনিময়ে তার নমুনা মাটিটি দিয়ে আসেন পরীক্ষার জন্য, পরীক্ষার ফলাফল আসতে সময় লাগে ২৫-৩০ দিন। কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য কৃষককে অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয় বলে তার ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়, ফলে উৎপাদন ব্যায় বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে একজন কৃষককে মাটি পরীক্ষার প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে সময় নিতে হয় ২৫-৩০ দিন এবং খরচের পরিমান ৫০০-৮০০ টাক। এছাড়াও ল্যাবে তাকে কমপক্ষে ৫ বার ভিজিট করতে হয়। এসব ঝামেলা এড়াতেই তৈরি করা হয়েছে পোর্টেবল সয়েল টেস্টিং ডিভাইস। অতি স্বল্প মুল্যেই কৃষক এ যন্ত্রটি কিনতে পারবেন। মাটি পরীক্ষার পদ্ধতি আরো সহজ, কম সময় ও কম খরচে করার উদ্দেশ্যই মাটির প্রাণ নামক এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। প্রকল্পটির সহযোগিতায় ছিলেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ।
যেভাবে কাজ করে মাটির প্রাণ –
কৃষক ডিভাইস টি নিয়ে মাঠে আসবেনে এবং জমি কে ৯ টি ব্লকে চিহ্নিত করে মাটির নমুনা সংগ্রহ করবেন। আর্দ্রতা পরিমাপক সেন্সর কে মাঠের মাঝামাঝি স্থাপন করে মাটির আদ্রতার মান নেয়া হবে। সংগৃহীত নমুনা মাটি হতে দ্রবণ তৈরি করা হবে এবং সেই দ্রবণে phসেন্সর এর মাধ্যমে মাটির Phএর মান বের করা হবে। মাটি হতে প্রাপ্ত তথ্য গুল একটি মোবাইল অ্যাপে ইনপুট দেওয়া হবে। মোবাইল অ্যাপটি সম্পূর্ণ বাংলায় তৈরি করা ফলে একজন কৃষক খুব সহজে এটি ব্যাবহার করতে পারবেন। অ্যাপটি ইনপুটকৃত তথ্য গুলোকে বিশ্লেষণ করে মাটির বর্তমান অবস্থা, পুষ্টি উপাদান, কি পরিমাণ সার দিতে হবে এবং ওই মাটিতে কি ফসল ভাল হবে তা বলে দিবে।
আমাদের দেশের ৪৬.৬ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে জড়িত এদের মধ্যে বিশাল একটা অংশ তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে কৃষি কাজ করে যাচ্ছে। এদের টেকনোলজি সম্পর্কে ধারনা খুবই কম, যার ফলে জমিতে অধিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক ব্যাবহার হচ্ছে এতে খাদ্যের গুনাগুন নষ্ট হচ্ছে এবং কৃষকের ফসল উৎপাদন ব্যায় অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
কথা হয় প্রকল্পের উদ্ভাবক আবদুল্লাহ আল আরাফ এর সঙ্গে। তিনি বলেন,যেহেতু এটি সম্পুর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর একটি প্রকল্প। তাই যে কৃষক ডিভাইসটি কিনবেন তাকে আমাদের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা আশা করছি আমাদের মাটির প্রাণ প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্ভাবিত সয়েল টেস্টিং ডিভাইস কৃষিখাতে এক অনন্য অবদান রাখবে। মাটির প্রাণ প্রকল্পে রাহাত উদ্দিন আর রেজাউল খান নামের দুজন টিম মেম্বারের অক্লান্ত প্ররিশ্রমের কথাও জানাতে ভুলেননি এই উদ্ভাবক।