ভিশন টু সার্ভ গো উইথ আইসিটি শ্লোগানকে সামনে রেখে বড় পরিসরে দেশের বৃহত্তম কম্পিউটার মার্কেট রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার সিটি সেন্টার (মাল্টিপ্লাান) আজ থেকে শুরু হয়েছে ডিজিটাল আইসিটি মেলা। ৭ম বারের মতো ‘ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার-২০১৬’ নামের এ মেলা চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। কম্পিউটার সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতি আয়োজিত এবারের মেলায় সাড়ে ৬ শতাধিক প্রতিষ্ঠান সর্বশেষ প্রযুক্তির কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ক্যামেরা, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ তথ্যপ্রযুক্তির নানা পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। বাড়তি আয়োজনের পাশাপাশি মেলায় থাকছে বিশেষ ছাড় ও উপহার।
আজ বুধবার সকালে প্রর্দশনীর উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ সময়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সম্ভবনার দেশ এই দেশে অনেক সম্ভবনা রয়েছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করতে খুব আগ্রহ। সরকার ইতিমধ্যে ডিজিটাল ল্যাব থেকে শুরু করে ইন্টারনেট সবার কাছে পৌছে দিচ্ছে। আমি কম্পিউটারের উপর জার শতাংশ ভ্যাট তুলে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো। ডিজিটাল সমাজ গড়তে হলে ডিজিটাল সরকারকে সাহায্য করতে হবে।’
সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন,‘ডিজিটাল শব্দটি সকলের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার ইতিমধ্যে হাইটেক পার্ক, বিপিও সামিট, ডিজিটাল ওয়াল্ডসহ বেশ কিছু কাজ করেছে এবং সেগুলো সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করছে।’
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন,‘ আমাদের দেশে এখন ৭ কোটি তুরুণ রয়েছে। কিছুদিন আগেও ওয়াইফাই শব্দটির সঙ্গে কেউ অনেকে পরিচিত ছিলো না। কিন্তু এখন এই শব্দটি সবার কাছে পরিচিত। তরুণদেরকে আরো বেশি উৎসাহি করে তুলতে হবে। তাহলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন বাস্ত্যবায়ন হবে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বার তিনি বলেন,‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০০৮ যখন রুপান্তরিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর সবাই হাস্যকর হিসাবে নিয়েছিলো। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ হাসি না বাস্তব রুপ। ইন্টারনেট হচ্ছে মৌলিক চহিদা আর এই চাহিদা সবার কাছে পৌছে দেওয়ার কাজ করতে হবে সরকারকে।’
মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা জেলা কমান্ডার, সাবেক সংসদ সদস্য ও বৃহত্তর এলিফ্যান্ট রোড দোকান মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন,‘আইসিটি খাতকে বিকাশিত করতে হলে আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে তাহলে এশটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারবো।’
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি এ এইচ এম মাহফুজুল আরিফ এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান এস.এ. কাদের কিরণ বলেন,‘সরকারের প্রতি আমাদেও ব্যবসায়িদেও এশটি চাওয়া আমাদেরকে ভ্যাট মুক্ত রাখেন।’
অনুষ্ঠানে কম্পিউটার সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও মেলার আহবায়ক তৌফিক এহ্সোন
বলেন, প্রতিবারের চেয়ে এবার আরও বড় পরিসরে ও জাঁকজমকভাবে মেলা আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের সর্বস্থরের মানুষের মাঝে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার এবং এর সুফল ছড়িয়ে দিয়ে, বহু প্রত্যাশিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই নিয়মিত এ মেলার আয়োজন করা হয়।’
কম্পিউটার সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বলেন,‘ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কম্পিউটারের উপর সকল প্রকার ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।’
মেলায় বাংলাদেশের শীর্ষ আইসিটি পণ্য আমদানীকারক ও ব্যবসায়ীরা বিশ্বের মানসম্পন্ন ব্র্যান্ডের আধুনিক প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে। মেলা উপলক্ষে এবার বিশেষ আয়োজন হিসেবে থাকছে – প্রযুক্তি পণ্যের উপর আকর্ষনীয় মূল্য ছাড়, মেলা চলাকালীন সময় প্রতিদিন র্যাফেল-ড্র এর মাধ্যমে আকর্ষনীয় পুরষ্কার, রক্তদান কর্মসূচী, এন্ট্রিপাশের সাথে ফ্রি মুভি দেখার সু-ব্যবস্থা, ফ্রি ইন্টারনেট, ওয়াই-ফাই ও গেমিং জোন, ফটোগ্রাফি ও সেলফি প্রতিযোগীতা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, পিঠা উৎসব, আধুনিক প্রযুক্তি পণ্যের প্রদর্শনী সহ নানা আয়োজন। এছাড়া মেলার তৃতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হবে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা। মেলার শেষ দিনে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য দেওয়া হবে গুনীজন সংবর্ধনা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারের মেলায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্কুল কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা পদ্ধতিতে সর্বাধুনিক ও সর্বশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং এর সুফল সম্পর্কে ধারণা দিতে মেলায় থাকবে নানা আয়োজন। মেলায় পরিদর্শনের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে সু-ব্যবস্থা। ঢাকাসহ সারা দেশের যে কোন প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মেলার প্রবেশ ফ্রি করা হয়েছে। শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রদত্ত পরিচয়পত্র দিয়েই ছাত্র-ছাত্রীরা মেলা পরিদর্শন করতে পারবে। আগত শিশু ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করা হবে।
মেলার গোল্ড স্পন্সর এইচপি, আসুস, স্যামসাং ও লেনোভো। সিলভার স্পন্সর লজিটেক এবং এম এস আই। এছাড়া স্পন্সর হিসেবে আছে টিপি লিংক, রেপো এবং ইসেট।