ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশী তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করে যাবে দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। গত শনিবার রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি মিলনায়নে বেসিসের ১৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এমনই লক্ষ্য প্রকাশ করা হয়।
বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে সভায় বেসিসের সদস্য কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বেসিসের দুই শতাধিক সদস্য প্রতিষ্ঠানসহ এই সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সকল পরিচালকবৃন্দ, যথাক্রমে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, ফারহানা এ রহমান, পরিচালক উত্তম কুমার পাল, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, সৈয়দ আলমাস কবীর, সোনিয়া বশির কবির ও রিয়াদ এস এ হোসেন। এছাড়া বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি শামীম আহসান ও হাবিবুল্লাহ এন করিম, বেসিসের সাবেক পরিচালকবৃন্দ, স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানবৃন্দ, কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বেসিস সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান বেসিসের ২০১৬ সালের কর্মকাণ্ডের বিবরণী তুলে ধরেন। অপর সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পেশ করেন। পেশকৃত এসব প্রতিবেদনের উপর সভায় উপস্থিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য আলোচনায় অংশ নেন ও গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন।
সভায় বেসিস সচিবালয় শক্তিশালীকরণ, বিদেশে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং, সরকারি কাজে বাংলাদেশি সফটওয়্যার কোম্পানির অগ্রাধিকার নিশ্চিতকরণ, ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য নগদ প্রণোদনা, বেসিস সফটএক্সপোসহ বেসিস এর ইতোপূর্বে গৃহিত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বেসিসকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আহবান জানান বেসিস সদস্যরা।
এ বিষয়ে বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি। আমরা বাংলাদেশি কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কাজ করছি। আমাদের সরকার, আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তিবান্ধব। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যেকোনো দাবি তিনি অনায়াসে মেনে নেন। বেসিসের দাবির প্রেক্ষিতেই তিনি নীতিগতভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রপ্তানীতে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়গণও সম্মতি দিয়েছেন। আমরা শিগগিরই সেটি বাস্তবায়নে কাজ করবো। এছাড়া অন্যান্য বিষয়গুলোতেও বেসিস কাজ করছে।
বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান বলেন, বিদেশী কোম্পানি উচ্চমূল্যে টেন্ডারে অংশ নিয়ে পরে স্থানীয় কোম্পানিকে দিয়ে অত্যন্ত স্বপ্লমূল্যে করিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশি কোম্পানীর স্বার্থ রক্ষায় সরকারি সকল আইটি সংশ্লিষ্ট টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাতে সিংহভাগ কাজ বিদেশি কোম্পানিগুলো না নিতে পারে সেজন্যে অবিলম্বে বেসিস থেকে সিপিটিউতে দাখিলকৃত পিপিআর এবং এর টেমপ্লেট অনুমোদন করিয়ে আনতে হবে।
বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন যে, বেসিস সচিবালয় শক্তিশালী করে বিভিন্ন নীতিমালার খসড়া প্রণয়নে জোর দিতে হবে। বেসিস এর নিজস্ব উদ্যোগে একটা গবেষণা করতে হবে যাতে বর্তমানে আইটি শিল্পে কর্মরত জনবলের বেতন কাঠামো, বাজারের পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক চিত্র পাওয়া যায়। আয়কর অব্যাহতির সুবিধা যাতে সকল সদস্য কোম্পানি পেতে পারে সেজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করারও আহবান জানান তিনি। একইসাথে আইটি কনসালটেন্সিকে আয়কর অব্যাহতির আওতায় আনা বাঞ্ছনীয় বলেও মত দেন তিনি।
বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, বেসিস সচিবালয়কে শক্তিশালী ও দক্ষ করে তুলতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাহী পরিচালক নিয়োগের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্যদানকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রাপ্ত প্রস্তাব ও সুপারিশ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে বলে তিনি সদস্যদের প্রতিশ্রুতি দেন।