বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে, ২ লাখ মা-বোন তাদের সর্বোচ্চ আতœত্যাগ করেছে, ১ কোটি মানুষ শরনার্থী হয়েছে, সেই বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমরা জাতির পিতাকে হারিয়েছি। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বুঝতে পেরেছিল যে, একটি দেশকে হত্যা করা সম্ভব নয়, সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে হত্যা করা সম্ভব নয়। কিন্তু জাতির পিতাকে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলেই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা সম্ভব। তাই, তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল সপরিবারে। যেন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে, বাংলাদেশে কেউ নেতৃত্ব দিতে না পারে। কিন্তু সৌভাগ্যবশত ১৫ আগস্টের মাত্র ১৫ দিন আগে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা দেশের বাইরে গিয়েছিলেন বলেই আজকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত সেই স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে, দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবেসে বঙ্গবন্ধু কন্যা আজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রমে আমরা ধীরে ধীরে আলোর পথে যাত্রা করছি, অর্জন করছি অগ্রগতি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে”। বুধবার বিকালে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে ‘ জাতীয় শোক দিবস ২০১৬’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন।
দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সম্মিলিত অপচেষ্টায় বিপথগামী ঘাতকরা ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করে। এরপর দীর্ঘ ২১ বছরে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে বিকৃত ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। দেশে এবং দেশের বাইরে বসে সেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি অপপ্রচার চালিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর পর জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবারো উন্নয়নের পথে দেশকে ধাবিত করছেন। মাঝখানের ৭ বছর বাদ দিলে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়নের সরকার, জনগণের সরকার বলে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে। তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহবান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ- একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলায় হোক শোক দিবসের প্রত্যয়।
প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশিষ্ট সংবাদিক জাহিদ রেজা নুর বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে বাঙ্গালিকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলে দেয়া হয়। ফলে, ৭৫ এর পর থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত ইতিহাসের দিক দিয়ে আমরা মারাতœক এক সংকট অতিক্রম করেছি। ভুল তথ্য শেখানোর মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মকে ভুল পথে পরিচালিত করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মত বিশাল সত্তার মৃত্যু হয় না জানিয়ে জাহিদ রেজা নুর বলেন, যারা সত্যিই সত্যের পথে থাকে, তাদেরকে মেরে ফেলা যায় না। তাই, বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে চির দিন অমর থাকবেন। বঙ্গবন্ধু দিন দিন আমাদের মাঝে বড় হতে থাকবে, বাড়বে বঙ্গবন্ধুর চেতনা।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বভিাগরে অতরিক্তি সচবি র্পাথ প্রতমি দবে, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্কের এমডি হোসনে আরা বেগম এনডিসি, কন্ট্রোলার অব র্সাটফিায়ংি অথরটি’ির কন্ট্রোলার আবুল মনসুর মোহাম্মদ সারফ উদ্দনি, সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০০০ কম্পিউটার ল্যাব ও প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক এএসএম শফিউল তালুকদার প্রমূখ। উপস্থিত ছিলেন আইসিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব মো: হারুনুুর রশিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বভিাগরে অতরিক্তি সচবি সুশান্ত কুমার সাহাসহ আইসটিি ডিভিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে শাহাদাত-বরণকারী সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে এক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।