বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মাঝে যে কয়েকটি ব্র্যান্ড সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তার মধ্যে রিয়েলমি অন্যতম। বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্মের ব্যবহারকারীদের মধ্যে রিয়েলমি’র জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও, এ অল্প সময়ের মাঝেই ব্র্যান্ডটি বিশ্বের ৬১ টি বাজারে নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে। গত তিন বছরে রিয়েলমি তরুণ ও সকল শ্রেণীপেশার মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত প্রযুক্তির পণ্য বাজারে এনে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মার্কেট রিসার্চ কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্স’র তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী দ্রুততম সময়ে ১০ কোটি ফোন বিক্রির মাইলফলক অর্জনের রেকর্ডটিও এখন রিয়েলমি’র দখলে।
পরিসংখ্যান বলছে, রিয়েলমি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে বিভিন্ন দেশে রিয়েলমি’র অবস্থান বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি স্মার্টফোন নির্মাতা ব্র্যান্ড হিসেবে ফিলিপাইন ও বাংলাদেশে প্রথম স্থানে রয়েছে, ভারত ও রাশিয়ায় রয়েছে ৪র্থ স্থানে এবং ইউরোপ অঞ্চলে রয়েছে ৫ম স্থানে। শুধু তাই নয়, চলমান মহামারির মাঝে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, রিয়েলমি দক্ষতার সাথে বাজার পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতাদের নিকট স্মার্টফোন পৌছে দিয়ে নিজেদের অসাধারণ সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
প্রতিনিয়ত রিয়েলমি তাদের ফোনগুলোতে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও ফিচারের অন্তর্ভুক্তি ঘটিয়ে নিজেদের পোর্টফোলিওকে আরও সমৃদ্ধ করছে। তারই ধারাবাহিকতায়, ব্র্যান্ডটি সাশ্রয়ী মূল্যের ফোন বাজারে আনার পাশাপাশি, আরও উন্নত ও অত্যাধুনিক ফ্ল্যাগশিপ ফোন বাজারে এনে ধীরে ধীরে হাই-এন্ড বাজারে প্রবেশ করছে। চলতি বছর তাদের ফ্ল্যাগশিপ জিটি সিরিজ থেকে স্মার্টফোন উন্মোচনের মাধ্যমে রিয়েলমি স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিকে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
রিয়েলমি’র সর্বশেষ বাজারে আনা ফ্ল্যাগশিপ ফোন – জিটি নিও ২। এর আগে, একই সিরিজ থেকে ব্র্যান্ডটি জিটি মাস্টার এডিশন বাজারে এনেছে। এসব ফোনের ফিচারের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, রিয়েলমি ধীরে ধীরে তাদের ফোনে আরও অত্যাধুনিক সংস্করণের ফিচার ও প্রযুক্তির সংযোজন ঘটাচ্ছে।
জিটি সিরিজের জিটি মাস্টার এডিশনে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৭৭৮জি ৫জি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। পরবর্তীতে, একই সিরিজের জিটি নিও ২ – এ আরো উন্নত সংস্করণের কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৭০ ফাইভজি প্রসেসর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ক্যামেরা সেটআপের দিকে লক্ষ্য করলেও দেখা যায়, জিটি নিও ২–এ ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপে ৬৪ মেগাপিক্সেল মূল ক্যামেরার সাথে ৮ মেগাপিক্সেলের ১১৯⁰ আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স এবং ৪ সেন্টিমিটার ম্যাক্রো লেন্স অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্যাটারির দিক থেকেও জিটি মাস্টার এডিশনের ৪,৩০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি থেকে জিটি নিও ২ তে ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে।
রিয়েলমি কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, উন্নত প্রযুক্তির সংযোজনের ধারাবাহিকতায় আগামী বছর রিয়েলমি আরও অত্যাধুনিক ফোন বাজারে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। হাই-এন্ড বাজারে প্রবেশের যাত্রাকে আরও বেগবান করতে, আগামী বছর বাজারে আসবে রিয়েলমি’র নতুন ফ্ল্যাগশিপ, যে ফোন হবে আরও উন্নত ফিচার সমৃদ্ধ।
জিটি সিরিজের ফোনগুলোর ক্যামেরা যেভাবে ধীরে ধীরে উন্নত করা হয়েছে, আগামী বছর যে ফোনটি বাজারে আসবে, সেটিতেও আরও বড় সেন্সর ও উন্নত সফটওয়্যার অন্তর্ভুক্ত করে এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছে রিয়েলমি।
সাশ্রয়ী মূল্যে স্মার্টফোন বাজারে আনার পর এবার আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে ফ্ল্যাগশিপ ফোন বাজারে এনে রিয়েলমি ধীরে ধীরে হাই-এন্ড বাজারে প্রবেশ করছে। ক্রমান্বয়ে তারা ফোনের ক্যামেরা, প্রসেসর, ব্যাটারিসহ সব ধরণের ফিচার আরও আপডেট করছে। তরুণদেরকে তাদের পছন্দের ব্র্যান্ডের পরবর্তী ফ্ল্যাগশিপ ফোন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত!