বাংলাদেশ অর্জন করলো উইটসা গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯

প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জীবন মানের উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেল। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্র এবং আইসিটিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ অর্জন করেছে উইটসা গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯। পাঁচটি বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে গৌরবজ্জ্বল সম্মাননা চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভান-এর কারেন ডেমিরচান কমপ্লেক্সে তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব ইনফরমেশন টেকনোলজি’র (ডব্লিউসিআিইটি) ২১তম আয়োজনের অ্যাওয়ার্ড নাইটে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ অর্জন করলো উইটসা (WITSA) গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯। সম্মেলনে পাঁচটি বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে গৌরবজ্জ্বল সম্মাননা চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির চেয়ারম্যান ইভোন চু এর হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি এবং পরিচালক ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম। বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত এই সম্মেলন শুরু হয়েছিলো গত ৬ অক্টোবর থেকে, ওয়ার্ল্ড আইটি সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স (উইটসা) প্রতিবছর এই সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে। গতকাল সম্মেলনের শেষ দিনে WITSA 2019 এর চেয়ারম্যান এওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে নির্বাচক কমিটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন এবং উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন হাই-টেক পার্ক এর অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে পুরস্কার প্রদান করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবং ICT সেক্টরের বিকাশে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এই পুরস্কার পাওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্বে ICT সেক্টরে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিতে বৈদেশিক বিনিয়োগের সম্ভাবনার দ্বার আরো সম্প্রসারিত হলো। চলতি বছর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অসামান্য অবদান রাখায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে এই এওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের পরে চেয়ারম্যান এওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে এই

সম্মানজনক পুরস্কার প্রদান করে। প্রসঙ্গত, ৬ অক্টোবর শুরু হওয়া উইটসার ২১তম সম্মেলন ডব্লিউসিআইটিতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি এর নেতৃত্ব ৩৭ সদস্যের একটি দল অংশগ্রহণ করেছে।

চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ড অর্জন সম্পর্কে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি বলেন, এই অর্জন তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার স্বীকৃতি দেয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নের পদধ্বনি সারা পৃথিবীকে আলোড়িত করেছে। হাই-টেক পার্কের মাধ্যমে আমরা বিদেশি বিনিয়োগের পথকে সহজ করেছি। দেশে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, আইটি বিশেষজ্ঞ তৈরিসহ শ্রম শক্তির পাশাপাশি মেধা শক্তিতে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট অব থিংস, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই), রোবট নির্মাণে দেশের তরুণরা অগ্রসর হচ্ছে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম, এনডিসি বলেন, হাই-টেক পার্কের এই সফলতায় আমরা গর্বিত। আমাদের এই অর্জনের কৃতিত্ব শুধু আমাদের একার নয়। দেশের তরুণ সমাজের স্বপ্নপূরণে হাই-টেক পার্ক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আইটি ব্যবসায় প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো হাই-টেক পার্কে নিজেদের পরিধি বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। তথ্যপ্রযুক্তিতে তড়িৎ গতির উন্নয়নের এই পদযাত্রা চলমান থাকবে। আমরাই হবো তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান।

২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিতকরণ এবং বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। সারাদেশে প্রথম পর্যায়ে ২৮টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ০৩টি পার্কের নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পূর্ণদ্যোমে চলছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২১টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।

আইটি সেক্টরে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে ১২,০০০ এর অধিক জনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সরকারি/বেসরকারি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার পার্ক সমূহে এবং বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় প্রদানকৃত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩,০০০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

Share This:

*

*