ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতির ফলে আগামী দিনের শিক্ষাব্যবস্থা কিংবা জ্ঞান অর্জন অথবা প্রশিক্ষণ ক্লাশরুমে সীমিত থাকবে না। রূপান্তরিত পৃথিবীতে প্রযুক্তির প্রয়োগ জনগণের কাছে পৌঁছানোই হবে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রযুক্তিতে পরিবর্তন অনিবার্য, কর্মজীবনে এ পরিবর্তনের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পারলে টিকে থাকা যাবে না।
মন্ত্রী সোমবার রাতে টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজ, গাজীপুরে ৬৮তম বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা
বলেন।
প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নবীনদেরকে সামনের কর্মজীবনের জন্য নিজেদের তৈরি করতে এবং প্রযুক্তি প্রয়োগে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, সামনের যুগটা মেধার ও জÍানের। নিজেদের জীবনের চ্যালেঞ্জ নিজেদেরকেই নিতে হবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জÍান ভান্ডার ইন্টারনেট। জÍানের জন্য যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করবে না ৫ বছর পর ব্যর্থতার দায় তাদের নিজেদেরকেই বহন করতে হবে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পৌছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দেশে ২৭৬০ টি সেবা ডিজিটাল করা দরকার। এর মধ্যে ৯৬০ টি সেবা জনগণের কাছে পৌছানো প্রয়োজন। স্মার্ট ফোনেই জনগণ ঘরে বসেই এসব সেবা পাবেন । তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টি ও প্রজÍাবান নেতৃত্বে গত দশ বছরে বাংলাদেশ ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবে বৈশ্বিক নেতৃত্বের সক্ষমতায় পৌছেছে। এরই ধারবাহিকতায় আগামী ৫ বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন অনিবার্য। দেশে শিক্ষাব্যবস্থায় যুগান্তকারি পরিবর্তন আসবে, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার
আমুল পরিবর্তন ঘটবে। ৫ বছরে বই, খাতা, চক, ডাস্টার থাকবে না, ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিস্থাপিত হবে।
হাতের স্মার্টফোন দিয়েই আগামী ৫ বছরের মধ্যে টাইপের কাজ করা যাবে, বাংলায় কথা বললে বিদেশী শ্রোতারা তা কনভার্ট করে নিজ ভাষায় শোনতে পাবেন । ভাষার ক্ষেত্রে আমরা এই জায়গায় পৌছানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি উল্লেখ করেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। তিনি বলেন, আইওটি ডিভাইস ব্যবহার করে
আমাদের ছেলে- মেয়েরা মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এই পদ্ধতিতে খাদ্যের চাহিদা নিরূপন করার মাধ্যমে এতে খাদ্যের বিশাল অপচয় কমছে।
মন্ত্রী বলেন, টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি প্রযুক্তি চালুর ক্ষেত্রে বিশ্বে অন্যদেশ থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে ফাইভজি চালু করার চিন্তাই করেনি, সেখানে বাংলাদেশ ফাইভজির সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। ফাইভজি চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একদিনও পিছিয়ে যাবে না। ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ফাইভজি চালু করা সম্ভব হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তখন ইন্টারনেটের গতি হবে ২০ জিবিপিএস। যা দিয়ে অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হবে দেশের তরুণ সমাজ। তিনি আরও বলেন, বুনিয়াদী প্রশিক্ষণে অংশ্রগ্রহণকারী নবীন কর্মর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ ৫ বছরের ভেতর যদি ডিজিটাল সরকার চালানোর যোগ্যতা আপনারা অর্জন করতে না পারেন তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতি সামলানো আপনাদের জন্যই কঠিন হবে’।
টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজের মহাপরিচালক খান আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: মহিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।