চালু হল নবম ও দশম শ্রেণির জন্য দেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত ই-লার্নিং ও ই-ম্যানুয়েল কনটেন্ট । এর ফলে শিক্ষার্থীরা যেমন অনলাইনে নিজেদের পাঠ নিতে পারবে তেমনি শিক্ষকরাও পাঠদানের জন্য পরিপূর্ণ একটি গাইডলাইন পাবেন ডিজিটাল মাধ্যমে। টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট-২ (টিকিউআই–২) প্রকল্পের আওতায় এথিকস অ্যাডভান্সড টেকনোলজি লিমিটেডের (ইএটিএল) সহযোগিতায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামগ্রিক নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে এসব কনটেন্ট তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবি (www.nctb.gov.bd) ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে আইডিটি বিষয়ে গেলেই এই সাধারণ শিক্ষা নেওয়া যাবে।
নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর একটি হোটেলে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ডিজিটাল বইয়ের কার্যক্রম উদ্ধোধন করেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম ঘরে ঘরে তথ্যপ্রযুক্তি পৌঁছে দিব। এখন তা দিচ্ছি। স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দিয়েছি। ইন্টারনেট সংযোগও দেয়া হচ্ছে। অনলাইন শিক্ষার এসব উপকরণ ছাত্র–ছাত্রীদের আরও সৃজনশীল করে তুলবো।’ বিশেষ অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘হঠাৎ করে আইসিটির কারণে পুরো বিশ্বে মানুষের জ্ঞান বাড়ছে। আইসিটির ফলে শিক্ষার মান কমছে তা মোটেও নয়, বরং আরও বাড়ছে।’
ইএটিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান বলেন, ‘ই-লার্নিং এবং ই–ম্যানুয়াল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বেশ সহায়ক হবে। আশা করছি, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার আশাব্যাঞ্জক ফল বয়ে আনবে। ই–লার্নিং ও ই–ম্যানুয়েলে উদ্ধোধনীতে দেশের শিক্ষা খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। শিক্ষায় এসব উপকরণ ভূমিকা রাখবে।’
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয় ই-লার্নিং কনটেন্টের আওতায় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, সাধারণ গনিত, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের অনুশীলনগুলো পাওয়া যাবে ডিজিটাল বইয়ে। প্রতিটি বিষয়ের উপর অ্যানিমেশন, সিমুলেশন, ডায়াগ্রাম, ইমেজ, ইন্টারঅ্যাকটিভ টেস্ট, বিভিন্ন ধরনের ভিডিও রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণ এবং শিক্ষকদের পাঠ প্রদানকে আরও আকর্ষণীয় ও গুরুত্ববহ করে তুলবে। অন্যদিকে ই-ম্যানুয়েলের কন্টেন্ট গুলো তৈরি করা হয়েছে শিক্ষকদের জন্য। শিক্ষকদের ক্লাসে সঠিক উপায়ে পাঠদান, পাঠদানের পদ্ধতি, পাঠ পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পূর্ন রুপরেখা থাকছে এতে। এসব বিষয়ের উপরও বানানো হয়েছে বিভিন্ন ভিডিও, অ্যানিমেশন, ইমেজ। ইন্টারঅ্যাকটিভ টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ধারণায় ভুল রয়েছে কিনা তা জানা যাবে, সত্য-মিথ্যা, সঠিক উত্তর বাছাইসহ বিভিন্ন পরীক্ষা দিতে পারবেন অনলাইনে এবং স্কোরও পাবেন।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা এবং কারিগরি বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা, এডিবির সিনিয়র সোশ্যাল সেক্টর অফিসার এস এম এবাদুর রহমান, টিকিউআই–২ এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জহির উদ্দীন বাবর, ইএটিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামানসহ অনেকে।