আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ বাংলা কি-বোর্ড লজিটেক কে-১২০ অবমুক্ত করলো কম্পিউটার সোর্স। গত রাতে ঢাকার আগারগাঁও এ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় বাংলার সর্বশেষ সংস্করণের নকশায় বৈশ্বিক ব্র্যান্ডে এই বাংলা কি-বোর্ড প্রকাশ করা হয়। কি-বোর্ডটির মোড়ক উন্মোচন করেন কম্পিউটার সোর্স ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজুল আরিফ, বিজয় বাংলা রূপকার মোস্তাফা জব্বার এবং লজিটেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সার্ক ও ভারত) মনিদ্র জেইন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন লজিটেক ভারত ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের ক্লাস্টার ক্যাটাগরি বিভাগের প্রধান অশোক জানগ্রা, লজিটেক বাংলাদেশ ও ভূটান অঞ্চলের কান্ট্রি ম্যানেজার পার্থ ঘোষ, কম্পিউটার সোর্স এর পরিচালক এ ইউ খান জুয়েল এবং আসিফ মাহমুদ। স্বাগত বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ বলেন, ভাষা ও মানুষ অবিচ্ছেদ্য প্রত্যয়। একে অপরের সঙ্গে নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ। ভাষা অত্যন্ত প্রাণবন্ত এবং সর্বদা সচল। প্রযুক্তিও একই রকম। মানুষকে প্রাণচঞ্চল করে। দূরকে যেমন জয় করে। তেমনি জড়বস্তুর সঙ্গে মিতালী রচনা করে।
লজিটেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সার্ক ও ভারত) মনিন্দ্র জেইন বলেন, দুনিয়া জুড়ে বাংলা ভাষার রয়েছে একটি স্বাতন্ত্র্য ঐতিহ্য। এই বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক অনন্যতার করাণেই প্রতিবছর ২১ ফেব্রæয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষা ও এ দেশের মানুষের ভাষার প্রতি যে ভালোবাসা তার প্রতি সম্মান দেখিয়েই আমরা আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজির পর প্রথমবারের মতো লজিটেক কে ১২০ বাংলা কি বোর্ড বাজারজাত শুরু করলাম। বাংলাদেশে আমাদের অযুত শুভানুধ্যয়ী রয়েছে। ব্র্যান্ড ও এর বিক্রয়োত্তর সেবা মানে যে সব গ্রাহক এতোদিন লজিটেক কি-বোর্ড দিয়ে বাংলা বর্ণমালায় টাইপ করতে বেগ পেতেন, তাদের সেই সীমাবদ্ধতা আজ থেকে ঘুচে গেলো। আমাদের বিশ্বাস এই কি-বোর্ডটি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত বাংলাভাষী মানুষের কাছে নিজেদের কি-বোর্ড হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিজয় বাংলা কি-বোর্ড জনক এবং বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘লজিটেক কে ১২০ বাংলা কি বোর্ড’ পূর্ণাঙ্গ একটি বাংলা কি-বোর্ড। এটি বিজয়’র তৃতীয় সংস্করণ। এই কি-বোর্ড বাংলাভাষীদের ঐতিহ্যকে যেমন লালন করছে তেমনি লুপ্ত ভাষা সাহিত্যকে ফিরিয়ে আনতেও অবদান রাখবে। ইউনিকোড বিধিসম্মত দুই স্তরের এই কিবোর্ডের মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে প্রাচীন বাংলার লুপ্ত চিহ্ন ও লিপি। তাই জমির দলীলে থাকা কানা-কড়ির হিসাব যেমন সহজেই লেখা যাবে তেমনি কড়া, গÐার হিসাব কিংবা পুঁথিগুলোকে ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে এই কি বোর্ডটি বাংলা লিপি ব্যবহারকারী অসমীয়া, মনিপুর, নাগা, চাকমারাও ব্যবহার করতে পারবেন। আমাদের বিশ্বাস, কম্পিউটারে পূর্ণাঙ্গ বাংলা লেখার জন্য এই কি-বোর্ডটি লেখক-প্রকাশক থেকে শুরু করে দাপ্তরিক কাজে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আরাধ্য হবে। তিনি আরও বলেন, কম্পিউটার সোর্স-কে আমি নিজের পরিবার মনে করি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাধ্যমেই বিজয় আজ এই অবস্থানে আসতে পেরেছে। ২০০৩ সালে কম্পিউটার সোর্স নিজেদের ব্র্যান্ডে বিজয় কি-বোর্ড লে আউট প্রকাশ করে। আর আজ লজিটেক এর মাধ্যমে এই লে আউট প্রকাশ করে বিজয়’র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।