বাংলাদেশে বিশ্বমানের মোবাইল গেম তৈরির লক্ষ্যে ‘গেম জ্যাম’ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেছে গ্রামীণফোন ও হোয়াইট-বোর্ড। এত সহযোগী হয়েছে সরকারের আইসিটি ডিভিশন। মোবাইল গেম তৈরির ক্ষেত্রে ক্রাউড সোর্স থেকে শুরু করে ডেভেলপ এবং উন্মোচন করতেই অভিনব এ প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠান দুটি। দেশের সর্ববৃহৎ এ মোবাইল গেম তৈরির প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহীদের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে গত ২৩ মার্চ, ২০১৭। মোট ২৫টি দল ‘জ্যাম’-এ ৪৮ ঘন্টাব্যাপি একে অপরের সঙ্গে লড়াই করবে শীর্ষ তিনটি স্থানে পৌছে যেতে । তিন বিজয়ী দলকে তাদের গেমকে বিশ্ব বাজারে পৌছে দিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে গ্রামীণফোন। উচ্চমাত্রার ভিজ্যুয়াল বা গ্রাফিক্স ও ইফেক্ট, স্মরণীয় ভ্রমণ এবং আকর্ষণীয় মেকানিক্সের সমন্বয়ে গেম তৈরি করতে হবে প্রতিযোগিদের। গেমগুলো হতে হবে কৌশলী এবং ইন-অ্যাপ পার্চেজ পদ্ধতিতে খেলার সুযোগ থাকতে হবে। গেম জ্যামে অংশ নিতে আগ্রহীদের যেয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
টানা ৪৮ ঘন্টার ‘জ্যাম’ শুরু করার পূর্বে আগামি ২২ এপ্রিল ২৫টি নির্বাচিত অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে নিয়ে একটি প্রস্তুতিমূলক বুট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে। অতঃপর, আগামি ২৮ থেকে ২৯ এপ্রিল অনুুষ্ঠিত হবে ‘জ্যাম’ বা প্রতিযোগিতার মূল অংশ। কঠোর প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে অভিজ্ঞ নির্বাচকমন্ডলী দ্বারা সুক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার ভিত্তিতে নির্বাচান করা হবে শীর্ষ তিন বিজয়ী দল।
চলতি বছরের জুলাই মাসের মধ্যে অ্যাপ স্টোরের জন্য পূর্ণাঙ্গ গেম তৈরি করে ফেলতে হবে বিজয়ী দলগুলোকে, যেগুলো গ্রামীণফোন আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করবে। শীর্ষ তিন বিজয়ী দল পাবে সবরকম আর্থিক এবং প্রযুক্তি বিষেশজ্ঞদের সহযোগিতা, যাতে করে দলগুলো গেমারদের চাহিদা অনুযায়ী গেম তৈরি করতে পারে। উক্ত গেমগুলো হবে গ্রামীণফোনের উন্নত ডিজিটাল পণ্যের অংশ এবং একই সঙ্গে টেলিনরের সংযুক্ততার মাধ্যমে পাবে বিশ^মানের মর্যাদা।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা চাই দেশের তরুণ প্রজন্ম গেমিং খাতের সম্ভব্য সবধরনের সুযোগ গ্রহণ করুক, বিশ্বব্যাপী যার বাজারমূল্য ১০০ বিলিয়ন ডলার। আর এ কারণেই আইসিটি ডিভিশন গ্রামীণফোনের সঙ্গে মিলে ‘গেম জ্যাম ২০১৭’ আয়োজন করছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের দেশের গেম ডেভেলপাররা অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
গেম তৈরিতে অংশগ্রহণকারীদের উপযুক্ত কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবে আইসিটি ডিভিশন। আয়োজনে অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে এমল্যাব, স্যামসাং, অপেরা, ওয়াওবক্স, অ্যাপনোমেট্রি। বাংলাদেশে মেধাবী গেম ডেভেলপারের খোঁজার লক্ষ্যে উক্ত ‘গেম জ্যাম’ প্রসঙ্গে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, “বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল সংখ্যক প্রযুক্তিপ্রেমী মেধাবী অ্যাপ ও গেম ডেভেলপার, যারা উপযুক্ত প্ল্যাটফর্মের জন্য অপেক্ষা করছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল সেবাপ্রদানকারী হিসেবে গ্রামীণফোন প্রযুক্তিতে দেশের মেধাবী মুখগুলোকে খোঁজার কাজ শুরু করেছে। দেশে এখন পর্যন্ত গেমিং খাতের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আর তাই ‘গেম জ্যাম’-এর মতো একটি উপযুক্ত গেম ডেভেলপ করার প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এসেছে গ্রামীণফোন, যেখানে দেশের মেধাবী ডেভেলপাররা নিজ থেকে এগিয়ে এসে অভিনব গেম তৈরি করার প্রয়াস পাবে এবং এর মাধ্যমে দেশের গেম ডেভেলপ খাত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। দেশের ডিজিটাল কমিউনিটিকে প্রযুক্তির ক্ষমতায়নে এগিয়ে নিয়ে যেতে এটি গ্রামীণফোনের স্বপ্নপূরনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য একটি পদক্ষেপ।’
স্যামসাং ইলেক্ট্রনিক্স বাংলাদেশ-এর মোবাইল বিভাগের প্রধান মুইদুর রহমান বলেন, “প্রযুক্তিতে নতুনত্ব ও গ্রাহককে খুশি করার সবরকম সুযোগের সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ‘গেম জ্যাম ২০১৭’ আয়োজনে আমরা গ্রামীণফোনের সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছি। অভিনব প্রযুক্তি তৈরির এ প্রতিযোগিতা আয়োজনের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এ পদক্ষেপ বাংলাদেশের গেমিং খাতকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, আগামি ১৩ এপ্রিল, ২০১৭ তারিখ পর্যন্ত আগ্রহীরা ‘গেম জ্যাম-এর অংশগ্রহণ করতে আবেদন করতে পারবে।
ক্যাপশন: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি তার কার্যালয়ে সম্প্রতি গেম জ্যাম নিয়ে গ্রামীণফোনের সিইও পেটার বি ফারবার্গ এবং সিএমও ইয়াসির আজমান এর সাথে আলোচনা করেন।