ঢাকায় অনুষ্ঠিত হল ভিসা’র বার্ষিক ঝুঁকি ও নিরাপত্তা সম্মেলন

ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গ্লোবাল পেমেন্ট টেকনোলজি নেটওয়ার্ক ভিসা’র বার্ষিক ঝুঁকি এবং নিরাপত্তা সম্মেলন। সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশে ভিসা’র গ্রাহক এবং অংশীদারদের জন্য। যেখানে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ১০০ জনেরও বেশি স্টেকহোল্ডার অংশগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও নিরাপত্তাখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে ভিসা’র বিশেষজ্ঞরা সাইবার নিরাপত্তা, মোবাইল পেমেন্ট জালিয়াতির অরক্ষিত সিস্টেমের নানান দিক নিয়ে বৈশ্বিক অবস্থা এবং তাদের পর্যবেক্ষণ শেয়ার করেছেন।

সম্মেলনে, ‘রিস্ক সার্ভিসেস’ এর ভারত এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান ভিপিন সুরেলিয়া, বলেন, “আমাদের বাংলাদেশ ভিত্তিক বার্ষিক ঝুঁকি এবং নিরাপত্তা সম্মেলন এমন একটি (ইন্টার‍্যাক্টিভ)মিথস্ক্রিয়ামূলক প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিশ্বের সর্বোত্তম পেমেন্ট নিরাপত্তা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, বড় ধরনের সাইবার হামলাকে চলতি বছরের পঞ্চম বৃহত্তম ঝুঁকি১ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। উদীয়মান বাজারগুলো এই ধরনের আক্রমণের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই ধরনের ঘটনাগুলো চিহ্নিত, প্রশমন এবং হ্রাস করার জন্য কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। ভিসা প্রতিনিয়ত এদেশে তাদের অংশীদারদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণামূলক কাজের বিরুদ্ধে কাজ করছে। যাতে করে পেমেন্ট সিস্টেমের একটি স্থায়ী অবকাঠামো তৈরি হয়।

৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, বাংলাদেশে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম সফলভাবে কার্যকর করার জন্য ভিসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভিসা ঝুঁকি ও নিরাপত্তা সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মতো ক্রমবর্ধমান বাজারের এর প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিতে চাই। যেন তারা ঝুঁকি সংক্রান্ত কাঠামো এবং নিরাপত্তা রোডম্যাপ গঠনের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির এই ধারা বৃদ্ধি করতে পারে।”

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানজেমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুর আলম অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আইটি গর্ভান্যান্স-এর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এবং সাইবার নিরাপত্তা ঠেকাতে বোর্ড এবং উর্ধ্বতন পর্ষদের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তার আলোচনার মূল বিষয়গুলোর একটি হলো ‘সহযোগিতা’। এবং তিনি ইনফরমেশন শেয়ারিং অ্যান্ড অ্যানালাইসিস সেন্টারস এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ ইন ব্যাংকিং টেকনোলজি (আইডিআরবিটি)-এর মতো ইনস্টিটিউট স্থাপনের পরামর্শ দেন। অনেকটা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার মত, যাতে করে বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত উদ্যোগ আরো ত্বরান্বিত হয়। তিনি অংশগ্রহণকারীদের প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং আইটি ও তথ্য নিরাপত্তার ওপর প্রশিক্ষিত পেশাদার নিয়োগের আহ্বান জানান। ১These are the biggest risks facing our world in 2019: World Economic Forum

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ডিজিটাল পেমেন্টে সংক্রান্ত কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি বিআইবিএম জরিপে দেখা গেছে, বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে নন-ক্যাশ পেমেন্ট ৫৩% বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ ক্রেতারা এখন আরো বেশি পরিমাণে অনলাইনে কেনাকাটা করেন এবং খুচরা দোকানগুলিতে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন।

আরো অত্যাধুনিক পেমেন্ট পদ্ধতি উদ্ভূত হওয়ার সাথে সাথে শক্তিশালী নিরাপত্তা অবকাঠামো এবং ব্যাংকগুলির জন্য তাদের গ্রাহকদের ডেটা এবং লেনদেন সুরক্ষিত এবং নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন ভিসার নিরাপত্তা ও ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা। সম্মেলনটিতে প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ আইটি পেশাদারদের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়, যারা জালিয়াতি রোধে সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত এবং মোকাবেলা করতে পারে।

বিশ্বব্যাপী ভিসা’র জন্য অর্থ আদান-প্রদানে একটি নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং নির্ভরযোগ্য পরিবেশ নির্মাণের জন্য পেমেন্ট সিকিউরিটি এবং জালিয়াতি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। এর টুলগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিএএ (ভিসা অ্যাডভান্সড অথরাইজেশন), ভিআরএম (ভিসা রিস্ক ম্যানেজমেন্ট), সাইবারসোর্স ডিসিশন ম্যানেজার, ভিসা কাস্টমার অথেনটিকেশন সার্ভিস, ভিসা সিকিউর ইত্যাদি যা ব্যাংকগুলোকে প্রতিটি ধাপে নজরদারি, সনাক্তকরণ এবং জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে।

Share This:

*

*