ডিজিটাল ট্রন্সফরমেশনে প্রয়োজন ডিজিটাল পেমেন্টের সহজীকরন

দেশে ডিজিটাল ট্রান্সেকশন বাড়লে তা ডিজিটাল ব্যবসাকে বাড়াবে, বাড়াবে দেশের সকল ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনকে। কিন্তু এক্ষেত্রে সেবাপ্রদানকারী এবং ব্যবহারকারীর মধ্যে এ  রয়েছে সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও নির্ভরতার বিষয়ে বেশ কিছু জটিলতা যা নিরসনে প্রয়োজন এ বিষয়ে গণসচেতনতা। গতকাল লেকশোরে হোটেলে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল ট্রান্সেকশনে এসব কথাই উঠে আসে।

গভর্নেন্স পলিসি এক্সপ্লোর সেন্টার ও র‌্যালী রাউন্ড এর যৌথ উদ্যোগে ১৮ এপ্রিল, ২০১৭ তারিখে ঢাকার লেকশোর হোটেলে ‘ডিজিটাল ট্রানজেকশন সামিট ২০১৭’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। দিনব্যাপি আয়োজিত এই সামিটের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে সামিট এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের অর্থ মন্ত্রাণলয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ডঃ আবদুর রাজ্জাক এমপি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রাণলয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মো তাজুল ইসলাম এমপি এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এর সাবেক সভাপতি মো: সবুর খান। এছাড়াও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাষ্টারকার্ডের ক্রান্টি প্রধান সৈয়দ কামাল , সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার, এসএস ওয়্যারলেসের সিটিও আশিষ চক্রবর্তী, ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংকিং এবং ই-কমার্স বিভাগের প্রধান জনাব সিরাজ আজম সিদ্দিকী বেসিস পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, লংকা বাংলার সিটিও জনাব মাইনুল ইসলাম ,ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল এক্সপ্লোর সেন্টার এর প্রধান নির্বাহী রাজীব পারভেজ এবং  র‌্যালী রাউন্ড এর সিইও নাজনীন নাহার । উদ্বোধনের পর ” প্রসফেক্ট এন্ড চ্যালেঞ্জ অফ ডিজিটাল ট্রান্সজেকশন ইন বাংলাদেশ” শিরোনামে একটি গোলটেবিল আলোচনা । এ পর্ব সঞ্চালনায় ছিলেন সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকার র মূল অনুষ্ঠানে গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএসএল ওয়্যারলেস এর হেড অব ই-বিজনেস নওয়াত আশেকিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান গভর্নেন্স পলিসি এক্সপ্লোর সেন্টার এর প্রধান নির্বাহী রাজীব পারভেজ এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন র‌্যালী রাউন্ড এর সিইও নাজনীন নাহার।

মূল বক্তব্যে নাওয়াত আশেকিন বলেন- ডিজিটাল বিজনেস এ ডিজিটাল লেনদেন গুরুত্বপূর্ণ। দেশে ডিজিটাল ট্রান্সেকশনের মাত্র ৩% সম্পন্ন হয় অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে। অন্যদিকে মোবাইল ব্যাংকিং এর জনপ্রিয়তা কার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাই এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোসহ সকল সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক এবং সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে যাতে ডিজিটাল ট্রান্সেকশনকে জনপ্রিয় করা যায় যা আমাদের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে তরান্বিত করবে।

প্রধান অতিথির বক্ত্যবে ডঃ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সফট্ওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রে বিগত দশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। লাখ লাখ তরুণ আউটসোর্সিংয়ের মাঠে সক্রিয়। যার ফলে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে এই খাত থেকে। ব্যাংকসমূহ ডিজিটালাইজড হয়ে গেছে বহু আগেই, যার ফলে অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ইত্যাদি সুবিধা জনগণের দ্বারপ্রান্তে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম বলেন- এ ধরনের আয়োজন আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের পথকে সুগম করবে। ডিজিটাল ট্রান্সেকশনের সমভাবনা আমাদের রয়েছে এবং নিশ্চয়ই আমরা সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাব।

মাস্টারকার্ডের সৈয়দ কামাল বলেন- ব্যাংকগুলো যতগুলো ব্যাংক একাউন্ট আছে সে পরিমাণে কার্ড ইস্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকার যদি এগিয়ে আসে তবে তা  ডিজিটাল ট্রান্সেকশনের বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এসএস ওয়্যারলেসের আশিষ চক্রবর্তী বলেন-কার্ড ইস্যু এবং পস (পিওএস) এর জটিলতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, এক্ষেত্রে এক অপরের আগে না পরে এ বিষয়টি হতে বেড়িয়ে এসে সমাধানে আসা উচিত। চালডাল ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়া আশরাফ বলেন- ডিজিটাল ট্রন্সজেকশক জনপ্রিয়করনে প্রিপেইড ও কোব্রান্ডেড-কার্ড ইস্যু করা গেলে তা ই-কমার্সের তথা ডিজিটাল ট্রান্সেকশনের জন্যও ফলপ্রসু হবে।

ক্রেতাদের অতিরিক্ত সুযোগ দিতে হবে যাতে ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা কার্ড ব্যবহারে তাদের ক্রেতাদের উৎসাহিত করতে পারে-বলেন প্রিয়শপ ডট কম এর সিইও আশিক আলম খান। ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন-ডিজিটাল ট্রান্সেকশনের পরিধি যতো বাড়বে ই-কমার্সের গতি ততোই বাড়বে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার যদি একসাথে কাজ করে, তবে এখাতে বিরাজিত সমস্যার সমাধান সম্ভব। উক্ত সামিটে আরো বক্তব্য রাখেন অংশগ্রহণ করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংকিং এবং ই-কমার্স বিভাগের প্রধান জনাব সিরাজ আজম সিদ্দিকী, লংকা বাংলার সিটিও জনাব মাইনুল ইসলাম, ওয়ান ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান জনাব সৈয়দ মারুফ আলী, ট্রাস্ট ব্যাংকের এভিপি জনাব রিয়াজুর রহমান, মাস্টারকার্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট গিতাংক দত্ত, বিদ্যুৎ লজিস্টিকের প্রধান নির্বাহী মাসুদ এ মল্লিক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বেসিস পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, বেসিস ব্যাংকের ডিজিএম নাসিরউদ্দিনস সহ অন্যান্য ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংকিং বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তাবৃন্দ।
সামিটের সহযোগীতায় ছিল এসএসএল ওয়্যারলেস, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এবং মাস্টারকার্ড।

Share This:

*

*