জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম পর্ব শুরু

গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর তার পঞ্চম ব্যাচের জন্য আবেদন পত্র গ্রহণ শুরু করেছে। স্টার্টআপ ঢাকার সহযোগিতায় আয়োজত এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য মিনিমাম ভায়বল প্রোডাক্ট (এমভিপি) আছে এমন প্রযুক্তি বিষয়ক স্টার্টআপগুলোকে আগামী ৭ এপ্রিল ২০১৮ এর মধ্যে www.grameenphoneaccelerator.com/apply — এর মাধ্যমে আবেদন করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে।

জিপি অ্যাকসেলেরেটর একটি উদ্ভাবন সহায়ক প্ল্যটফর্ম যা দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় চার মাসের একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে স্টার্টআপগুলোকে বাজারে তাদের পণ্য ও সেবা নিয়ে আসতে সহায়তা করে। নির্বাচিত স্টার্টআপগুলোর প্রতিটিকে ১৫০০০ মার্কিন ডলার সিড ফান্ডিং, ১১২০০ ডালারের সমপরিমাণ আমাজন ওয়েব সার্ভিস ক্রেডিট এবং জিপি হাউজে অফিস দেয়া হবে।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী, খাত বিশেষজ্ঞ এবং পেশাজীবীরা টার্ম শিট, মূল্যায়ন, আর্থিক মডেলিং- এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্টার্টআপগুলোকে সহায়তা করবেন। প্রতিটি দলকে দেয়া সহায়তার মূল্যমান প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা।

নির্দিষ্ট মেয়াদী, দলভিত্তিক এই কর্মসূচি অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দৃঢ় ব্যবসায়িক মডেল তৈরি, বিনিয়োগযোগ্য এবং পরিমাণযোগ্য হতে সহায়তা করে। এটি বিনিয়াগকারীদের একটি ডিনারের মাধ্যমে শেষ হয় সেখানে স্টার্টআপগুলো স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীসহ অন্যন্যদের সামনে নিজেদের ব্যবসাকে উপস্থাপন করে। এই প্রোগ্রামে অংশ নেয়ার পর প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মূল্য ছয় মাসের মধ্যেম গড়ে ৪ গুন বৃদ্ধি পায়।

পঞ্চম ব্যাচের আবেদন গ্রহণ শুরু হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এটি শুধু জিপি অ্যাকসেলেরেটর নয় বরং বাংলাদেশের স্টার্টআপ কমিউনিটির জন্য একটি বড় মাইলফলক। স্টার্টআপ বাংলাদেশ থেকে আমরা যেসব স্টার্টআপকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি তাদের মধ্যে সেরা কয়েকটি জিপি অ্যাকসেলেরেটরে অংশ নিয়েছে। আমাভ বিশ্বাস জিপিএ ইতোমধ্যেই নিজেকে স্থানীয় এবং আর্ন্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে একটি আদর্শ অ্যাকসেলেরেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যদি দারুণ একটি ব্যবসায়িক ধারণা, কার্যকর একটি কর্মীদল এবং আত্মবিশ্বাস থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার এতে অংশ নেয়া প্রয়োজন। আমি সকল আবেদনকারীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’

এই কর্মসূচি সম্পর্কে জিপি অ্যাকসেলেরেটরের প্রদান মিনহাজ আনোয়ার বলেন, ‘সিড মানির পাশাপাশি যে সব সুযোগ সুবিধা গ্রামীণফোন দিয়ে থাকে সেগুলো সহই জিপি অ্যাকসেলেরেটরের মূল্যায়ন করা উচিত। জিপি অ্যাকসেলেরেটর স্টার্টআপগুলোকে প্রয়োজনের সময় বাজারে প্রবেশাধিকার, যোগযোগ এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে । আমাদের প্রতিটি ব্যাচ ইকোসিস্টেমের জন্য নতুন নতুন মানদণ্ড সৃষ্টি করছে।

২১টি স্টার্টআপ নিয়ে ইতোমধ্যেই জিপি অ্যাকসেলেরেটর ৪টি ব্যাচ সম্পন্ন করেছে। আগের ব্যাচগুলোতে সেবা, সিএমডি, ক্র্যামস্ট্যাক, জলপাই, অলটার ইয়ুখের মতো সফল স্টার্টআপ ছিলো। এদের মধ্যে কিছু স্টার্টআপ ডিজিটাল উইনার্স এশিয়া, সিডস্টারস ওয়ার্ল্ড, স্লাশ জিআইএ, স্টার্টআপ গ্রিন্ড, বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং ন্যাশনাল ডেমো ডে এর মতো স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে এবং বিজয়ী হয়েছে।

স্টার্টআপ ঢাকার সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা জিপি অ্যাকসেলেরেটরে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সাফল্যে আনন্দিত। আমরা এসব স্টার্টআপের ব্যাপক সাফল্য দেখতে পেয়েছি। তারা শুধু স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ই জয়ী হচ্ছে না, তারা আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে নিরাপদ ও আনন্দময় করে তুলছে। আমাদের সাথে কাজ করা দু’টি স্টার্টআপ ইতিমধ্যেই বাজার মূল্যে ৫০ লাখ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের কঠোর প্রচেষ্টা এবং জিপি অ্যাকসেলেরেটরের মতো প্ল্যাটফর্মের সাহায্যের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা ৫ম ব্যাচেও আরো কিছু অসাধারণ প্রতিষ্ঠানকে আশা করছি।”

আগ্রহী স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতাদের এই প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানানোর জন্য বেশকিছু সেশন আয়োজন করা হবে। এর প্রথম দুটো আগামী ১ এপ্রিল বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ইউল্যাবে এবং দ্বিতীয়টি ২ এপ্রিল বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জিপিহা্উজে অনুষ্ঠিত হবে। এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ফেসবুকে https://www.facebook.com/gpaccelerator/ এবং www.grameenphoneaccelerator.com ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে।

Share This:

*

*