জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহ শুরু

দেশের সরকারি বিভিন্ন সেবা, ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায়ের প্রচার-প্রসার ও ইন্টারনেট গ্রাহক বাড়াতে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহ ২০১৬’। মঙ্গলবার (২৩ মে ২০১৭) সকাল ১০টায় রাজধানীর ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় দুইদিনব্যাপী এই মেলার।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এই মেলার আয়োজন করেছে। ঢাকায় বৃহৎ এই মেলার পাশাপাশি বাংলাদেশের সবকটি উপজেলায়ও পালিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ এই ইন্টারনেট উৎসব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এবারের জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার সরকার এবং ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মোয়াজ্জম হোসেন মোল্লাহ্। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক। আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মালিহা নার্গিস, জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহের আহ্বায়ক ও বেসিস পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবীর প্রমুখ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে। আর এক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে। ইন্টারনেট হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের প্রধান নিয়ামক। প্রান্তিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় এই ইন্টারনেট পৌছে দিতে আমরা দেশের সবগুলো ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল সংযোগ প্রদানের কাজ করছি। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় নানা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ইন্টারনেট সপ্তাহ সেই কার্যক্রমকে তুলে ধরা ও জনগনকে ইন্টারনেটমুখী করতে সহায়তা করবে।

বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সংগ্রামে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের। আর ইন্টারনেট হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপান্তরের সেই প্রধান ধাপ। আমরা কথিত তলাবিহীন ঝুঁড়ির দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছেন। আশাকরি তার আগেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। আর এক্ষেত্রে আমাদের তরুণরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ইতিমধ্যেই আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের উন্নয়ন বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পেরেছি। আমরা নেপাল, ভুটানের ডিজিটাল রুপান্তরে কাজ করছি। বাংলাদেশের ঘোষনার পরেই বিশ্বের অন্যান্য দেশে ডিজিটাল রুপান্তরের ঘোষনা দিয়েছে। আমাদের তরুণদের মনোবল থাকলেই আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রায় পৌছাতে পারবো।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মোয়াজ্জম হোসেন মোল্লাহ্ বলেন, ঢাকা কলেজ ঐতিহ্য ও সাফল্যম-িত একটি প্রতিষ্ঠান। যুগের চাহিদায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে ইন্টারনেট সপ্তাহের আয়োজনে যুক্ত হতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আগামীতে এ ধরণের আয়োজনে সম্পৃক্ত থাকার কথাও জানান তিনি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে একটি প্রধান বিষয় হলো ইন্টারনেট। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কতোটা এগিয়েছে এবং ইন্টারনেটের প্রসারে সচেতনতা বাড়াতে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হচ্ছে জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহ।

এবারের জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় ২৫টি ই-কমার্স কোম্পানি, মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান, ওয়েব পোর্টাল, ডিভাইস কোম্পানিসহ ইন্টারনেটভিত্তিক পণ্য ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। নিজস্ব স্টলে তারা তাদের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন সেবা তুলে ধরছেন। এছাড়া দুইদিনে মোট ৪টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

Share This:

*

*