গ্রামীণফোনের ২০১৭ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ

টেলিকম অপারেটর গ্রামীণফোন ২০১৭ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গ্রামীণফোন লি. ২০১৭ সালে ১২৮৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১১.৮% বেশি । ডাটা থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে ৪৬.৪%, এবং ভয়েস থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে ৯.৫%। ২০১৭- এর চতুর্থ প্রান্তিকে রাজস্ব ৮.০% বেড়েছে।

গ্রামীণফোন গতবছরে ৭৪ লক্ষ স্বক্রিয় গ্রাহক যোগ করেছে যেখানে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১২.৭%। গতবছর গ্রামীণফোনে যুক্ত হয়েছে ৬৬ লক্ষ ডাটা গ্রাহক। এর ফলে মোট গ্রাহকের ৪৭.৭% ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে।

গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল প্যাট্রিক ফোলি বলেন, ‘২০১৭ এ আমরা  খুবই প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে শক্তিশালী ব্যবসায়িক ফলাফল এনে দিয়েছি। কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ এবং বাজারে সঠিকভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এই সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি। আমাদের সিম মার্কেট শেয়ার ৪৫.৪% এবং ভয়েস থেক অর্জিত রাজস্বের প্রবৃদ্ধি আরো বেড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমাদের কর্মপদ্ধতিকে আরো দক্ষ ও দ্রুতগতি সম্পন্ন করে, প্রমাণিত কৌশলগত অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে কোম্পানিকে সম্মানিত শেয়ারেহাল্ডারদের জন্য আরো লাভজনক করে তুলবো।’

আয়কর প্রদানের পর ২০১৭ এ মুনাফা হয়েছে ২৭৪০ কোটি টাকা। উচ্চ রাজস্ব আয় এবং দক্ষ পরিচলন ব্যয়ের কারণে এ বছর EBITDA (অন্যান্য আইটেমের আগে) হয়েছে ৭৬২০ কোটি টাকা। এ বছর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ২০.৩১ টাকা।

গ্রামীণফোনের সিএফও কার্ল এরিক ব্রোতেন বলেন, ‘গ্রামীণফোন  টপলাইন এবং মুনাফার প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে আরেকটি বছর সম্পন্ন করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে গ্রাহক এবং তাদের সেবা ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে। আমরা সেবার মূল্য নির্ধারণ বিশেষ করে ডাটার মূল্য নির্ধারণে বেশ প্রতিযোগিতামূলক চাপে ছিলাম। আমাদের পরিচলণ দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগের মুনাফা আরো বেড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই বাজারের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সহজীকরণ উদ্যোগে বিশেষ মনোযোগ দেয়ায় এই কোম্পানি আগামীতেও লাভজনক প্রবৃদ্ধি এনে দিতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী। আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বোর্ড অফ ডিরেক্টররা শেয়ার প্রতি ১০ টাকা চূড়ান্ত লভ্যাংশ সুপারিশ করেছেন।‘

গ্রামীণফোন ২০১৭ এ তার থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্থাপন, টুজি নেটওয়ার্ক এর মানোন্নয়ন এবং ভবিষ্ৎ  ব্যবসার জন্য আইটি অবকাঠামোর দক্ষতা বৃদ্ধিতে ১৪৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এদিকে, দেশের বৃহত্তম কর দাতা গ্রামীণফোন ২০১৬ সালে সরকারি কোষাগারে কর, ভ্যাট, শুল্ক ও লাইসেন্স ফি হিসেবে ৬১৮০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে যা কোম্পানির মোট রাজস্ব আয়ের ৪৮.১ শতাংশ।

২৯ জানুয়ারি ২০১৮- এ অনুষ্ঠিত বোর্ডসভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণফোন লি.- এর পরিচালকমণ্ডলী ২০১৭- এর পুরো বছরের জন্য  শেয়ার প্রতি ২০.৫ টাকা নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে। এর ফলে,  ২০১৬ সালের জন্য মোট নগদ লভ্যাংশের পরিমান দাঁড়ালো পরিশোধিত মূলধনের ২০৫ শতাংশ যা ২০১৭ সালের কর পরবর্তী মুনাফার ১০১% (এর মধ্যে রয়েছে ১০৫ শতাংশ অন্তবর্তী নগদ লভ্যাংশ)। রেকর্ড তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮- তে যারা শেয়ারহোল্ডার থাকবেন তারা এই লভ্যাংশ পাবেন যা ১৯ এপ্রিল ২০১৭ এ অনুষ্ঠতব্য ২১তম  বার্ষিক সাধারণ সভার দিন শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল।

গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, ‘২০১৮- তে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনেকগুলো উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবে, যার মধ্যে আছে ফোরজি পরিচালনা লাইসেন্স, তরঙ্গ নিলাম ও প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা, টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স, মোবাইল নম্বর পোর্টাবিলিটি ইত্যাদি। আমরা মোবাইল শিল্পের সেবাকে আরো উন্নত করতে সরকার ও এই শিল্পের মধ্যে অর্থপূর্ণ আলোচনার বিষয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা কথা আবারো উল্লেখ করছি, যা বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে।

Share This:

*

*