ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রস্তাবনা অনুযায়ী দ্রুতসময়ের মধ্যে ডিজিটাল কমার্স সেল গঠনের পাশাপাশি জোর গুরুত্ব পাচ্ছে ক্রস বর্ডার ই-কমার্স ইস্যুটি। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট পলিসি কো-অর্ডিনেশন কমিটির ১৩তম সভায় বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।
বৈঠকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আদলে ক্রস বর্ডার ই-কমার্সের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ উন্মুক্ত করতে করণীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শুল্ক বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ ও টেলিকম মন্ত্রণালয় ছাড়াও ই-ক্যাবকে সংশ্লিষ্ট করার বিষয়ে আলোচনা হয়। দ্রুততম সময়ে একটি পথনকশা তৈরির বিষয় গুরুত্ব পায়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন বিজনেস ইনিসিয়েটিভ লিডিং ডেলেপমেন্ট (বিল্ড) এর ট্রাস্টি ও সিইও ফেরদৌস আরা বেগম।
প্রস্তাবনার ওপর আলোচনা করেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার। এসময় উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট রেজওয়ানুল হক জামি ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
বৈঠকে ই-কমার্স ব্যবসায়ের প্রসারে ই-কমার্স খাতের উদ্যোক্তাদের স্বতন্ত্র ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান, ব্যাংক ঋণ ও বিনিয়োগ সুযোগ সহজীকরণসহ মহিলা উদ্যোক্তাদের এই খাতে সংশ্লিষ্ট করতে প্রণোদনা প্রদানের মতো পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। ‘ডিজিটাল কমার্স বা ই-কমার্স খাতে বিদেশি বিনিয়োগের পথকে সুগম করতে নীতিমালাকে আরো সুস্পষ্ট করতে সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় নিয়ে আলোচনা হয়। গুরুত্বারোপ করা হয় ই-বাণিজ্যের মেধাসত্ব সুরক্ষা ও ডিজিটাল নিরাপত্তার ওপর। ট্রাভেল কোটার বিপরীতে আলাদা কোটায় ই-কমার্স ব্যবসায়ের ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টি, পণ্য পরিবহনে ডাক বিভাগকে আরো সংশ্লিষ্ট করার বিষয়ে জোর দেয়া হয়।
বৈঠক বিষয়ে ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আজকের বৈঠক খুবই ফলপ্রসু হয়েছে। দেশে ই-কমার্সের প্রসার ও বাণিজ্যিক সুফল নিয়ে আসতে আমরা যে প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম ফ্যাক্ট ও ফিগারের মাধ্যমে বিল্ড আজ সেই দাবির যৌক্তিকতা প্রেজেন্টেশন আকারে উপস্থাপন করে। প্রস্তাবনাগুলো আলোচনায় প্রশংসিত হয়। এক পর্যায়ে কার্ডে বৈশ্বিক লেনদেনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ ছাড়াও ই-কমার্স খাতকে বিনিয়োগ আকর্ষণ বান্ধব করতে কী কী করণীয় তা নির্ধারণে ডিজিটাল কমার্স আইনের অধীনে দ্রুততার সঙ্গে একটি সেল গঠনের সিদ্ধন্ত হয়। পাশাপাশি ই-কমার্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য ক্রস বর্ডার ই-কমার্স নীতি ও আইনকে সুস্পষ্ট করার ওপর সর্বাধিক তাগিদ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতের মডেল অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়াও আইটি এনাবল সেবা হিসেবে না দেখিয়ে এই খাতকে একটি স্বতন্ত্র্য ব্যবসায় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবির বিষয় সভায় গুরুত্ব পেয়েছে। আলোচনা হয়েছে লাইসেন্স নবায়ন ফি-কে যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে নির্ধারণ এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট ইস্যু পুনর্বিবেচনা বিষয়েও। আশা করছি, শিগগিরি ই-কমার্স খাতের জন্য নতুন কিছু উপহার দেবে সরকার।