আগামীকাল ১৭ মে, বিশ্ব টেলযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস। এবছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “Bridging The Standardization Gap”। যার অর্থ হলো- তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান সংরক্ষণ। জাতিসংঘের অংগ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন(আইটিইউ) এর সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও এই প্রতিপাদ্যে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করবে।
মুল কথায় যেভাবে যে পণ্য বা সেবার মান নির্ধারণ করা হয়েছে, তা সব স্থানে যেনো একই মানে ব্যবহার করা হয়। যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিবসটিকে পালন এবং প্রতিপাদ্যকে অর্থবহ করতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি কর্তৃক বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আগামী ১৮মে (শনিবার) বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ দিবসটির মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে “Bridging The Standardization Gap” বিষয়ে মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড-এর পক্ষ থেকে কি-নোট উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও হুয়াওয়ে ও নোকিয়া নেটওয়ার্কস লিমিটেড এবং ইন্টারনেট প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ স্ব স্ব ক্ষেত্রে ৫ জির উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করবে।
এছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে বিসিএস (টেলিকম) সমিতি টেলিটেক জার্নালের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করছে এবং স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র/ছাত্রীদের অংশগ্রহণে অন-লাইন রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পার্শ্বে দিবসের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে সচেতনতামূলক ফেস্টুন ও ব্যানার প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, বাংলাদেশ বেতার, বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে। মোবাইলে এসএমএস প্রদান ও টিভি চ্যানেলে স্ত্রল প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে দিবস সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ এমপি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল হক এবং আইটিইউ এর মহাসচিব হাওলিন ঝা প্রমুখ বাণী প্রদান করেছেন।
সারা বিশ্বের জন্য আইটিইউ এর যে মানদণ্ডগুলো রয়েছে, সেগুলোই, বিশ্বব্যাপী বাজার উন্মুক্তকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে উদ্ভাবন ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে। সরকার আগামী ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যেই ৫-জি চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলোতে ৫জি আরও ব্যাপক অবকাঠামোসহ ব্যাপ্তি পাচ্ছে । ৫জি মান এবং তা যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে মিলিত হয়, তবে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলির একটি নতুন আঙ্গিক পাবে। যার মাধ্যমে বর্তমান স্মার্ট ফোনের মত আসবে স্বয়ংচালিত স্মার্ট গাড়ি, হতে পারে স্মার্ট শহর এবং গ্রাহক তা সাদরে গ্রহণ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিশ্বায়নের এ যুগে তথ্যপ্রযুক্তি ও উন্নত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম হাতিয়ার। তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় বিস্তার এ খাতের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রম করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ববাসীকে এক কাতারে শামিল করেছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তি সেবার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রেখে একই পর্যায়ে থাকা, আন্তর্জাতিক বাজারে সহজে বিচরণ, উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো এধরনের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের জন্য টেলিযোগাযোগের একটি অভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড থাকা দরকার। এই প্রেক্ষিতে এবারের “World Telecommunication and Information Society Day” এর প্রতিপাদ্য “Bridging The Standardization Gap” অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে।