এস্তোনিয়া, কলম্বিয়া ও নামিবিয়ার নেতৃবৃন্দের ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রমের প্রসংশা

২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ বিশ্বকে পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে যে ১৭ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় সম্মতি ক্জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশও তা ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত করেছে। এছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রাসমূহও এসডিজি’র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ই-গভর্নমেন্ট কার্যক্রমের আওতায় এর মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ, উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্হ্য সেবা , ২১ শতক উপযোগী মানব সম্পদ বিকাশে সহযোগিতা, আর্থিক- ধর্মীয়-জাতিসত্ত্বার পটভূমি বিচার না করেই নারী-পুরুষ সকলের জন্য সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সকল মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ নির্বিঘ্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি উচ্চ পর্যায়ের এসডিজি সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে একটি অনলাইন ডেটা ভাণ্ডার–এসডিজি ট্র্যাকার–চালু করা হয়েছে। তাই, তথ্যপ্রযুক্তির যুগান্তকারী ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ চেতনা হতে উৎসরিত কার্যক্রমের ফলে আমরা এসডিজি অর্জন করতে সক্ষম হবো বলেই আমি বিশ্বাস করি। গতরাতে নিউইয়র্কে(বাংলাদেশ সময় রাত ১২.৩০টা, ২১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সদর দপ্তরে জাতিসংঘে এস্তোনিয়ার স্থায়ী মিশন “ই-গভার্নেন্স:পার্টনারশীপ ফর এচিভিং এসডিজিস” শীর্ষক এক হাই-লেভেল সাইড ইভেন্টে কি-নোট বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ মন্তব্য করেন।

এসডিজি বাস্তবায়নে তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক কর্মকান্ডের বর্ণনা দিয়ে পলক আরও বলেন,আমরা ডিজিটাল হেলথ রেকর্ড সিস্টেম প্রতিষ্ঠা এবং মোবাইল অ্যাপ-ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করেছি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সারাদেশে ৬০০০ ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা করেছি, আরও ১৫০০০ ল্যাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইন্টারএকটিভ ডিজিটাল কন্টেন্ট চালু করার পাশাপাশি ২৫০০০ বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরূম প্রতিষ্ঠা করেছি।প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ই-লার্নিং সাইট। সকল দক্ষতা উন্নয়ন(প্রশিক্ষণ) কার্যক্রমে নারীদের জন্য ন্যূনতম ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। একটি প্রাণবন্ত উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে ইনোভেশন ডিজাইন এন্ড অন্ট্রাপ্রেনিওরশীপ একাডেমী(আইডিয়া)। এছাড়াও আমরা স্মার্ট ইলেকট্রিসিটি গ্রীড, স্মার্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, স্মার্ট ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করার মাধ্যমে ‘স্মার্ট সিটিজ এন্ড কমিউনিটিজ’ অর্জনে কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, সরকারী কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমরা ই-জিপি চালু করেছি। সরকারি সেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পেরসুবিধা গ্রহণ অধিকতর কার্যকর ও সহজলভ্য করতে আমরা স্মার্ট আইডি চালু করেছি। চালুকৃত ই-টেক্সশনে ৩০ লক্ষ মানুষ ট্যাক্স প্রদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং তারা অনলাইনের ট্যাক্স রিটার্ণ দাখিল করছে।  মোবাইল গ্রাহকের ঘনত্ব বিবেচনা করে জনগণকে হাতের মুঠোফোন সরকারি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৬০০ সরকারি মোবাইল অ্যাপস চালু করেছি। এছাড়াও, আমাদের সার্বিক কর্মকান্ডে মোবাইল ব্যাংকিং এ বাংলাদেশে বিপ্লব সাধিত করেছে এবং ব্যাংকিং সুবিধা-বঞ্চিত ৩ কোটি মানুষ এ সুবিধা গ্রহণ করছে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্পের এসিস্ট্যান্ট এডমিনিস্ট্রেটর, ডিরেক্টর ফর দ্যা ব্যুারো ফর পলিসি এন্ড প্রোগ্রাম সাপোর্ট এবং জাতিসংঘের সহকারী মহাপরিচালক মাগদা মার্টিনেজ-সলিমানের সঞ্চালনায় এই উচ্চ পর্যায়ের সাইড-ইভেন্টে আরও বক্তব্য রাখেন এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি কেসটি কালজুলাইড, নামিবিয়ার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রী টম আলেওয়েন্ডো, কলম্বিয়ার জাতীয় পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রী লুইস ফার্নান্দেজ মেজিয়া। বক্তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মকান্ডে সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার অন্তর্ভূক্তিমূলক কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

 

Share This:

*

*