আগামীর দিনগুলোতে ব্যবসাক্ষেত্রে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রভাব নিয়ে আলোচনায় সদ্য সমাপ্ত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ২০১৭- তে একসাথে হয়েছিলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিদ্ধান্ত প্রণেতা, চিন্তাবিদ, সরকারি কর্মকর্তাগণ, টেলিকম অপারেটর, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমূহ। একটি সাধারণ ইকোসিস্টেমে, সুযোগ ও মুনাফার ভিত্তিতে সবার জন্য টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার উপায় অনুসন্ধানে প্রযুক্তিখাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে গ্লোবাল ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ফোরাম আয়োজন করেছে বিশ্বের নেতৃত্বস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। সারাবিশ্বে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে যেসব বিষয় ও নতুন কিছু প্রবণতা প্রভাব ফেলছে ফোরামে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ বছর মূল আলোচনার বিষয়গুলো ছিলো: ফাইভ জি ইনোভেশন, রোডস টু নিউ গ্রোথ, নেটয়ার্ক ভ্যালু ম্যাক্সিমাইজেশন এবং অপারেশন ট্রান্সফরমেশন।
রোডস টু নিউ গ্রোথ
ফোরামে জিএসএমএ নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, এলজি ইউ প্লাস ও এলজি গ্রুপের উপদেষ্টাগণ এবং আইডিসি বিশ্লেষকরা নতুন প্রবৃদ্ধির সুযোগগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। টার্কসেল, চায়না টেলিকম, অ্যালটিবক্স ও টিএম নেট- এর মতো গ্লোবাল অপারেটরদের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাগণ বিশ্বের উদীয়মান বাজারগুলোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা ও তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ নিয়ে হুয়াওয়ে ক্যারিয়ার বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জৌ ঝিলেই বলেন, ডিজিটাল যুগে অপারেটরগুলো নতুনভাবে প্রবৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত করতে ভিডিও ও ক্লাউড গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখবে এবং এক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের পথে উন্মুক্ত ইকোসিস্টেম মূলবিষয় হিসেবে কাজ করবে। গ্রাহকদের সফল হতে সহায়তা করার পাশাপাশি, আমাদের অংশীদারদের পারস্পারিক মুনাফার পরিমাণ বৃদ্ধিতে আমরা ভিডিও ও ক্লাউড এবং উন্মুক্ত ইকোসিস্টেমে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করে চলেছি।
ফাইভ জি ইনোভেশন
মানদ- নির্ধারণ, স্পেকট্রাম কোলাবোরেশন বাস্তবায়ন, ফাইভ জি’র মান ত্বরাণ্বিত করা সহ সার্বিকভাবে এ শিল্পখাতকে ফাইভ জি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দিকে চালিত করতে আইটিইউ, থ্রিজিপিপি এবং অফকমের মতো রেগুলেটরি এজেন্সি নিজেদের মধ্যে চুক্তি করেছে। ডয়েচে টেলিকম, চায়না টেলিকম ও এনটিটি ডকোমোর মতো শীর্ষস্থানীয় টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ফোরজি থেকে ফাইভ জি’তে এ উন্নীতকরণের রোডম্যাপ, শুরুর দিককার ফাইভ জি কর্মাশিয়াল ও নীরিক্ষা প্রক্রিয়া নিয়ে নিজেদের ভাবনা ব্যক্ত করেছেন। এছাড়াও, হুয়াওয়ে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অল ক্লাউড স্ট্রাটেজি ভিত্তিক ফাইভ জি ইভোল্যুশন সল্যুশন ক্লাউড রান আর্কিটেকচারের ঘোষণা দিয়েছে। ফোরামে ভিআর/এআর সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, গাড়ি নির্মাতা, ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান ও ফাইভ জি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রতিনিধিরা ভার্টিকাল শিল্পখাতে ফাইভ জি’র সম্ভাব্য প্রয়োগ নিয়েও আলোচনা করেন। তারা শিল্পখাতে পারস্পারিক সহযোগিতার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা এবং সফল ব্যবসায়িক মডেল নিয়ে নিজেদের ধারণা বিনিময় করেন।
ম্যাক্সিমাইজেশন নেটওয়ার্ক ভ্যালু
লাতিন আমেরিকাকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে জিএসএমএ উদীয়মান বাজার সমূহে টেকসই উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে। এশিয়া প্যাসিফিক, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অপারেটররা হোম ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ডেপ্লয়মেন্ট, বিভিন্ন নগর প্রকল্প নির্মাণ, ইনডোর ডিজিটালাইজেশন এবং ফিক্সড নেটওয়ার্ক মর্ডানাইজেশন নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
অ্যাকসেলেরেটিং অপারেশনস ট্রান্সফরমেশন
সফলভাবে কার্যক্রমগত রূপান্তরের ব্যাপারে ও অত্যাধুনিক প্রতিযোগিতামূলক অনুশীলন নিয়ে শীর্ষস্থানীয় অপারেটরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কৌশল নিয়ে নিজেদের ভাবনা ব্যক্ত করেন। এ সময় ব্যবসা ও প্রযুক্তিখাত নিয়ে প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করা হয়। হুয়াওয়ের গ্লোবাল টেকনিক্যাল সার্ভিসেসের ভাইস-প্রেসিডেন্ট লেরয় ব্লিমাগার বলেন, ‘রূপান্তরের মূল বিষয় হচ্ছে রোডস (রিয়েল টাইম, অন ডিমান্ড, অল অনলাইন, ডিআইওয়াই ও সোশ্যাল)। আর এর জন্য একইসাথে দরকার গতিশীল ও স্বয়ংক্রিয় পরিচালনা ব্যবস্থা এবং নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর উন্নয়ন। অপারেটরদের ডিজিটাল ব্যবসায় রূপান্তরের ব্যাপারে হুয়াওয়ে তাদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে যৌথ অংশীদারিত্বে কাজ করবে। উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত হয় এমসিডব্লিউ ২০১৭।