২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্যে ঘোষিত বাজেটে ই-কমার্সের যেকোনো অনলাইন পণ্য কেনাবেচায় ৭.৫% ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়েছে।এর পরিপ্রেক্ষিতে ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ী এবং ই-কমার্স ইকোসিস্টেমসের অংশিজনদের নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস-বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বেসিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ গোলটেবিল বৈঠক।
গোলটেবিল বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সাধারণ স¤পাদক জনাব মো. আবদুল ওয়াহেদ তমাল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেসিস’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জনাব ফারহানা এ রহমান, পরিচালক এবং বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক জনাব দিদারুল আলম।
উপস্থিত ছিলেন বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, কো-চেয়ারম্যান আশিকুল আলম খান, কো-চেয়ারম্যান জিসান কিংশুক হক। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ, রকেট, উবার, পাঠাও, আইপে, সূর্যমুখী, প্রিয়শপ ডট কম, বাগডুম ডট কম, আজকের ডিল ডট কম, অথবা ডট কম, চালডাল ডট কম, হাংরিনাকি ডট কম, রকমারি ডট কম, পিকাবু ডট কম, সেবা এক্সওয়াইজেড, আইফ্যারি ডট কম, ই-ভ্যালি, ডেলিগ্রাম, প্রোপার্টি বাজার লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বেসিস সভাপতি প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে বলেন, আইসিটি খাতে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাজেটে বারাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ সর্বশেষ অর্থবছরের চেয়ে ২১৭৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, গতবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বরাদ্দ এ বছর ১৯৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই বাজেটে সরকার সোশ্যাল মিডিয়া বিজনেসের উপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এর উপর ভ্যাট কমানো হয়েছে যা প্রশংসনীয় । এজন্য আমরা মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
কিন্তু একইসাথে ভার্চুয়াল বিজনেস তথা ডিজিটাল কমার্স এর উপর ভ্যাট ০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭.৫ শতাংশ হয়েছে যা বিকাশমান এই খাতের অগ্রগতির জন্য অন্তরায়। আমরা তাই বিকাশমান এই খাতের জন্য অন্তত আগামী ৫ বছরের জন্য পুনরায় ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানাই।
বেসিস’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জনাব ফারহানা এ রহমান বলেন, আমাদের ই-কমার্স খাত অগ্রসরমান একটি খাত। ক্রমবর্ধমান এই খাতে শূন্য থেকে সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপ এ খাতের অগ্রগতি ব্যাহত করবে। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করছি।
বেসিস পরিচালক এবং বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক জনাব দিদারুল আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে সরকার প্রাধিকার প্রদান করছে। একইসাথে ই-কমার্স খাতে ভ্যাট আরোপ এ খাতকে অগ্রসর হতে দেবে না। সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট পরিবর্তন করে এ খাতকে আগের মতো ভ্যাটমুক্ত করার আহŸান জানাচ্ছি।
বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, আমাদের দেশের মানুষ অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্থ হতে শুরু করেছে। অনলাইনে কেনাকাটায় ভ্যাট আরোপ করলে বেশি দামে মানুষ আর অনলাইনে কেনাকাটা করতে চাইবে না। ই-কমার্স গ্রাহক হারাবে। ক্রমবর্ধমান এ খাত স্থবির হয়ে পড়বে। আমরা এ খাতে এখনই ভ্যাট চাচ্ছি না।
উপস্থিত ই-কমার্স ব্যবসায়ীরাও অন্তত আগামী ৫ বছরের জন্য ই-কমার্স খাতকে ভ্যাটমুক্ত করার আকুল আবেদন জানিয়েছেন।