আমার প্রথম ইজি পেমেন্ট কার্ড

মাস্টারকার্ড (এমসি), মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি) এবং বাংলালিংক যৌথ উদ্যোগে এই প্রথমবারের মতো নিয়ে এসেছে ইজি পেমেন্ট কার্ড। মুলত লাখো মানুষকে ব্যাংকিং খাতে নিয়ে আসার জন্য একটি পদক্ষেপ। গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও এ কার্ডটির উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় এক সংবাদ সম্মেলনের।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, এমপি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক,  বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা এবং বিটিআরসি-এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। এছাড়াও বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দসহ তিন প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

ডিজিটাল জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে বাংলাদেশ অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আজকের এই কার্ড উন্মোচন সেই নির্দেশনারই একটি সাহসী পদক্ষেপ। একটি পেমেন্ট টেকনোলজি কোম্পানির জন্য এটি এই প্রথম, বাস্তবে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান একত্রে এই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করছে।

ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা গ্রাহকদের অনলাইন এবং অফলাইন উভয়ভাবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়ে এই ইজি পেমেন্ট কার্ডটি প্রচলতি আর্থিক সেবা প্রদান করবে। আর্থিক সেবা ছাড়াও, এই কার্ডের মাধ্যমে কার্ড ব্যবহারকারীরা পাবেন  শীর্ষ ই-কমার্স সাইটগুলো থেকে ১৫০০ টাকা মূল্যের ডিসকাউন্ট ভাউচার এবং দেশব্যাপি ১৭০০ আউটলেট থেকে এক্সক্লুসিভ ডিসকাউন্ট এবং সুবিধা। এছাড়াও আমার প্রথম ইজি পেমেন্ট কার্ডধারীগণ উপভোগ করতে পারবেন নিরাপত্তা এবং সুবিধা, যাতে রয়েছে মাস্টারকার্ড এবং এমটিবি-এর পিওএস-এর শক্তিশালী নেটওয়ার্ক এবং দেশব্যাপি বিভিন্ন স্থানে এটিএম ব্যবহারের সুবিধা। উপযুক্ত বাংলালিংক গ্রাহকরা দেশব্যাপি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের যেকোনো শাখায় এই কার্ডটি বিনামূল্যে নিবন্ধন করতে পারবেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জনাম এম এ মান্নান বলেন, ডিজিটাল হতে যা যা করা দরকার আমরা সেটাই করবো বীর দর্পে।। তিনি আরো বলেন, শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই ইজি পেমেন্ট কার্ড গ্রাহকের জীবনের চাহিদাগুলোই পুরণ করবে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি এবং সিইও আনিস এ খান বলেন, “বাংলালিংক ও মাস্টারকার্ডের সাথে যুক্ত হয়ে বাংলালিংক গ্রাহকদের জন্য এই প্রথমবারের মতো এমন প্রিপেইড কার্ড নিয়ে আসতে পেরে আমরা আনন্দিত। ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই এই আর্থিক সেবার আওতায় আনতে পেরেছি বলে এই মুহুর্তটি আামাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কার্ডটি মূলত সেই সব গ্রাহকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যারা এখনো কোনো আর্থিক সেবার অধীনে আসেনি। ইলেকট্রনিক অর্থ এবং ই-কমার্সের এই যুগে, এই কার্ডটি গ্রাহকদের দুটো সুবিধাই উপভোগ করার সুযোগ করে দিবে।”

মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন,“মাস্টারকার্ড যত বেশি সংখ্যক সম্ভব মানুষকে আর্থিক সেবার মধ্যে নিয়ে আসতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। আমরা ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপি ব্যাংকিং সেবার আওতা বর্হিভূত ৫০০ মিলিয়ন মানুুষকে সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করেছি। এই ইজি পেমেন্ট কার্ড উন্মোচন আমাদের উদ্ভাবনী  সেবা ও সল্যুশন প্রদানেরই প্রতিশ্রুতি, যা স্থানীয় কমিউনিটির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জন করতে, আজ এই প্রথমবারের মতো শীর্ষ তিনটি ইন্ডাস্ট্রি দেশের ডিজিটাল ব্যবসাকে সম্প্রসারণের জন্য সম্মিলিত হয়েছে।”

বাংলালিংকের সিইও এরিক অস বলেন, “আমরা ইন্ডাস্ট্রিগুলোর  মধ্যে একে অপরের সহযোগিতায় বিশ^াসী এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও মাস্টারকার্ডের মতো অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সাথে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। বাংলালিংকের গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লক্ষেরও বেশী এবং আমরা বিশ্বাস করি তাদের হাতে আমরা একটি ডিজিটাল পেমেন্ট হাতিয়ার দিচ্ছি, যা আগামীতে ডিজিটাল অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা করবে। ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে সত্যিকারের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সুযোগ এবং এর মাধ্যমে সর্বোপরি গ্রাহকের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে। টেলিযোগাযোগ সেবার ওপর ভিত্তি করে অন্যান্য সেবা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেবার পরিকল্পনা নিয়ে বাংলালিংক ডিজিটাল লিডার হিসেবে এগিয়ে আসতে আগ্রহী ”।

Share This:

*

*