আজ ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় মেতে উঠে বাংলালিংকের মাদার কোম্পানি ভিওনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিইও জন ইভস, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এরিক অস, চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার তাইমুর রহমান, হেড অফ কর্পোরেট কমিউনিকেশনস আসিফ আহমেদ। আলাপচারিতায় যে সব বিষয়গুলো উঠে আসে তা ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর থেকে বাংলালিংক এ পর্যন্ত ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। জাতীয় তহবিলে বাংলালিংকের অবদান ২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বাংলালিংক প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং সহায়ক নীতিমালার আওতায় আগামী তিন বছরে আরও ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
বাংলালিংক বিগত ১২ বছর ধরে প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবন পরিবর্তনের একটি মর্যাদাপূর্ণ ইতিহাস নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছে।। বাংলাদেশের টেলিকম শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি এটি বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল স্বপ্ন পূরণেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
খসড়া ফোরজি (4G) ও স্পেকট্রাম/তরঙ্গ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রনয়নের মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করি একটি বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা প্রনয়ন করার কাঠামো তৈরি হয়েছে যা উন্নত ডিজিটাল সার্ভিস ও গ্রাহক সেবা প্রদানে সহায়ক হবে।
ভিওন বাংলালিংককে দেশের শীর্ষস্থানীয় যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে আগ্রহী, এবং এর মাধ্যমে ভিওন বাংলাদেশে ফোরজি (4G) সেবা চালু করা এবং ডিজিটাল অর্থনীতিকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখতে চায়। ভিওন সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষকে ডিজিটাল দুনিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভিওন মনে করে টেলিযোগাযোগ খাতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কর হার এবং স্পেকট্রামের উচ্চমূল্যের সম্মিলিত অর্থনৈতিক চাপ বিনিয়োগের অন্তরায় এবং তা বিবেচনায় আনা উচিৎ। আন্তর্জাতিক মানদন্ডের সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, করের চাপ এবং প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের মূল্য বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ। এটি দেশব্যাপী থ্রিজি (3G) এবং ফোরজি (4G) চালুর ক্ষেত্রে বিনিয়োগকে প্রভাবিত করবে যা উন্নত গ্রাহক সেবার আন্তরায়।
যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় স্পেকট্রাম/তরঙ্গ নেয়ার জন্য বাংলালিংক নীতিনির্ধারকদের সাথে একত্রে কাজ করতে আগ্রহী। এটি বাংলালিংককে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গ্রাহক সেবা দেবার বাধ্যবাধকতা ও দেশব্যাপী উন্নতর সেবা প্রদান অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে।
সর্বোচ্চ মানের ডিজিটাল সেবা প্রদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ভিওন মনে করে টেলিকম ব্যবসায়ের কর্মপন্থায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বাংলালিংক বিশ্বাস করে এই পদক্ষেপে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর হিসাবে “টেলিকম টাওয়ার”- যা এতদিন অপারেটারদের সম্পদ হিসাবে বিবেচিত ছিল তা পূর্বের ন্যায় গুরুত্ব বহন করে না। এ উদ্দেশেই বাংলালিংক টাওয়ার ব্যবসায় অধিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোম্পানির অংশগ্রহনে বিশ্বাসী। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলালিংক তার টাওয়ার বিক্রয় করতে পারবে যার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ মূলধন অবমুক্ত হবে এবং তা স্পেকট্রাম অধিগ্রহণ, নেটওয়ার্ক এবং অত্যাধুনিক ডিজিটাল সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
বেশিরভাগ দেশ টেলিকম অপারেটরদের অ্যাকটিভ রেডিও অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক (আরএএন) শেয়ারিং এর অনুমতি দেয়। এছাড়াও 2G, 3G, 4G এবং এর পরবর্তীসমূহ প্রযুক্তিতে শেয়ারিং চালু করা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হবে যার মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকাসমূহে প্রতিযোগীতা বাড়বে এবং ফোরজি কভারেজকে বর্তমানের টুজি/থ্রিজি’র সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
একটি কার্যকরী ফোরজি স্ট্রাটেজি প্রবর্তন করে সরকার স্থিতিশীল, গ্রাহকবান্ধব, প্রতিযোগীতামূলক, উদ্ভাবন সহায়ক এবং বিনিয়োগবান্ধব কর্মসূচি প্রয়োগের মাধ্যমে তার নিয়ন্ত্রক বিষয়গুলোকে আরো অগ্রসর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।